শনিবার, ১৩ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

আট বছরেও খোঁজ মেলেনি বাছেদের

অপেক্ষায় দিন কাটে স্বজনদের

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

আট বছরেও খোঁজ মেলেনি বাছেদের

আট বছর আগে নিখোঁজ হন ব্যবসায়ী বাছেদ আলম। ওই সময় তার ছোট সন্তানের বয়স ছিল পাঁচ বছর। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোরের কাছে বাবার স্মৃতি এখন অনেকটা ফিকে। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার্থী বড় ছেলের দিন কাটে বাবার ফিরে আসার অপেক্ষায়। স্ত্রী পুতুল চৌধুরী এখনো স্বামীর পথের দিকে চেয়ে চোখের জল ফেলেন। তিনি বিশ্বাস করেন বাছেদ আলম জীবিত আছেন। একদিন ঠিকই ফিরবেন। এ ঘটনায় ফতুল্লা থানায় মামলা হয়। পুলিশ অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করে। তারা জামিনে মুক্ত হয়ে চলে গেছেন আত্মগোপনে। কিন্তু বাছেদের খোঁজ মেলেনি। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার তুষারধারার বাসিন্দা বাছেদ পুরান ঢাকার ইসলামপুরে কেমিক্যালের ব্যবসা করতেন। ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ তিনি নিখোঁজ হন। পুতুল চৌধুরী জানান, নিখোঁজ হওয়ার সময় থেকে বাছেদের বাংলালিংক ও এয়ারটেল নম্বর দুটি বন্ধ রয়েছে। ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি হঠাৎ সক্রিয় হয়ে ওঠে বাছেদের রবি নম্বরটি। পরে ওই নম্বরে যোগাযোগ করা হয়। তখন নম্বরটি ব্যবহার করছিলেন এক নারী। অবস্থান ছিল চট্টগ্রামে। বিষয়টি র‌্যাব-১১-এর তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানানো হয়। ২০১৮ সালের ২৯ আগস্ট বাছেদের ব্যবহৃত ফেসবুক অ্যাকাউন্টও সক্রিয় হয়েছিল। জানা গেছে, মামলার পর ওই বছরের ১৭ মার্চ দুটি মোবাইল নম্বর থেকে বাছেদের মুক্তির জন্য ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। বাছেদ তখন নজরুলের জিম্মায় বলে জানানো হয়। বাছেদের বাড়ির অদূরে সাদ্দাম মার্কেট এলাকার বাসিন্দা নজরুল। মোটরসাইকেল বিক্রি নিয়ে নজরুল-বাছেদের বিরোধ হয়। বাছেদের সঙ্গে টাকা নিয়ে বিরোধ ছিল মামাতো ভাই খোকনেরও। ৬ মার্চ বাছেদ ঋণের ১৫ লাখ টাকা ফেরত চাওয়ায় খোকনের সঙ্গে ঝগড়া হয়। ওই সময় খোকন বাছেদকে হুমকি দেন, তোকে দুনিয়ায় থাকতে দেব না। এর সাত দিনের মাথায় বাছেদ নিখোঁজ হন। বাছেদ নিখোঁজের পর পুলিশ নজরুল, তার স্ত্রী আয়েশা ও শ্যালিকা লাকীকে গ্রেফতার করে। লাকীই নজরুলের কথায় বাছেদের পরিবারকে ফোন করে মুক্তিপণ চেয়েছিলেন। পরে এ তিনজনই জামিনে মুক্তি পান। নজরুল জামিনে মুক্ত হয়ে পালিয়ে যান। মামলার বাদী নিখোঁজ বাছেদের বাবা অহিদুল আলম ২০১৪ সালের ৯ জুলাই মারা যান। দুই সন্তানের জননী পুতুল চৌধুরী বলেন, ‘২০১৯ সালের আগস্টে নজরুলের ফেসবুকে বাছেদ আলম ও আসামি নজরুলের ছবি দেখতে পাই। পরে তা সরিয়ে ফেলা হয়। বিষয়টি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।’

বর্তমানে ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাব-১১-এর এসআই কামাল হোসেন বলেন, ‘তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যাদের আসামি করা হয়েছিল তারা সবাই জামিনে রয়েছেন। আসামিদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি। তার পরও আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর