বৃহস্পতিবার, ৬ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

কমছে মৃত্যু শনাক্ত, বাড়ছে লকডাউনের সুফল

৩৬ দিনে সর্বনিম্ন মৃত্যু, ৪৯ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন সংক্রমণ হার

নিজস্ব প্রতিবেদক

কমছে মৃত্যু শনাক্ত, বাড়ছে লকডাউনের সুফল

এক দিনের ব্যবধানে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হার ও মৃত্যু আরও কমেছে। ৪৯ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন সংক্রমণ হার শনাক্ত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। গত এক দিনে মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের, যা ৩৬ দিনের মধ্যে সবচেয়ে কম। তারপরও কাটছে না শঙ্কা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ফেব্রুয়ারিতে সংক্রমণ ও মৃত্যু সর্বনিম্ন পর্যায়ে আসার পরও এপ্রিলে এসে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে করোনাভাইরাসের তান্ডব চলছে। একই সঙ্গে ঈদবাজারে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত না করে গণপরিবহন চালু হলে আবারও সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২০ হাজার ২৮৪টি নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৭৪২ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এর চেয়ে কম সংক্রমণ হার ছিল গত ১৭ মার্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৫০ জন। এর চেয়ে কম ৪৫ জনের মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়েছিল গত ৩০ মার্চ। গত এক দিনে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৪৩৩ জন। এ নিয়ে গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩৮ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১১ হাজার ৭৫৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৯৮ হাজার ৪৬৫ জন। এদিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ৩ লাখ ৮২ হাজার ৩১৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এক দিনে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৭৮০ জনের। আমেরিকার পর কেবল ভারতেই মোট আক্রান্ত ২ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় ২ লাখ ২৬ হাজার ১৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদেহ সৎকারে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিতে হচ্ছে স্বজনদের। এই পরিস্থিতিতে গত ২৬ এপ্রিল থেকে ২ সপ্তাহের জন্য দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের স্থল সীমান্ত দিয়ে মানুষ চলাচল বন্ধ আছে। তবে দেশটিতে করোনার ভয়াবহ তান্ডবের কারণে সীমান্ত দিয়ে লুকিয়ে অনেকে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে বলে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, সংক্রমণ হার কমছে। তবে এটা যতক্ষণ ৫ শতাংশের নিচে না আসবে ও টানা ৪ সপ্তাহ সেই হার বজায় না থাকবে, ততক্ষণ স্বস্তির সুযোগ নেই। ফেব্রুয়ারিতে সংক্রমণ হার ৪ শতাংশের নিচে ছিল। আবার বেড়েছে। এই মুহূর্তে দেশের বাইরে থেকে কোনোভাবেই যাতে করোনার অন্য কোনো ভ্যারিয়েন্ট ঢুকতে না পারে সেদিকে গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সঙ্গে সর্বস্তরে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব সবাইকে টিকা কার্যক্রমের আওতায় আনতে হবে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৫০ জনের মধ্যে ৩২ জন ছিলেন পুরুষ ও ১৮ জন নারী। হাসপাতালে ৪৭ জনের ও বাড়িতে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বয়স বিবেচনায় মৃতদের মধ্যে ৩০ জন ছিলেন ষাটোর্ধ্ব, ১৩ জন পঞ্চাশোর্ধ্ব, ৫ জন চল্লিশোর্ধ্ব ও ২ জনের বয়স ছিল ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে ২৮ জন ঢাকা, ১৬ জন চট্টগ্রাম, ১ জন রাজশাহী, ৩ জন খুলনা ও ২ জন সিলেট বিভাগে মারা গেছেন।

সর্বশেষ খবর