স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের নির্যাতন সইতে না পেরে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন গৃহবধূ রহিমা বেগম (২০)। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। অভিযোগ উঠেছে, বাবার বাড়িতে ঘুমন্ত থাকা অবস্থায় তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে শরীর ঝলসে দিয়েছেন তার স্বামী। এতে রহিমার হাত-মুখসহ শরীরের প্রায় ৬৩ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল ভোরে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ রহিমার স্বামী অভিযুক্ত শিপন আহমদকে গ্রেফতার করেছে।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বড়লেখা উপজেলার হরিপুর গ্রামের রফিক উদ্দিনের মেয়ে রহিমা বেগমের সঙ্গে প্রায় তিন বছর আগে একই ইউনিয়নের আরেঙ্গাবাদ গ্রামের মুকুল মিয়ার ছেলে শিপন আহমদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নানা কারণে রহিমার সঙ্গে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের ঝগড়া লেগেই থাকত। এনিয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন রহিমাকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। নির্যাতন সইতে না পেরে প্রায় সাত মাস আগে এক সন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি চলে যান রহিমা। তবে সন্তানকে দেখার অজুহাতে প্রায়ই শ্বশুরবাড়ি যেতেন রহিমার স্বামী শিপন। গত শনিবারও শিপন শ্বশুরবাড়ি যান এবং রাতে সেখানে থাকেন। গতকাল ভোর ৫টার দিকে ঘুমন্ত স্ত্রীর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান শিপন। রহিমার চিৎকার শুনে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যান। এদিকে গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলার পশ্চিম হাতলিয়া এলাকা থেকে শিপনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পেট্রোল ঢেলে রহিমাকে তার স্বামী পুড়িয়েছে। পুলিশ অভিযুক্ত শিপনকে গ্রেফতার করেছে।