রবিবার, ১৮ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

রপ্তানি সচল রাখতে হবে ক্রেতারা ভয়ে আছেন

-এ কে আজাদ

রপ্তানি সচল রাখতে হবে ক্রেতারা ভয়ে আছেন

কঠোর বিধিনিষেধের লকডাউনে দেশের কৃষি ও সব প্রকার রপ্তানি খাত সচল রাখতে হবে বলে মনে করেন এফবিসিসিআইর সাবেক প্রেসিডেন্ট এ কে আজাদ। তৈরি পোশাকশিল্পের এই শীর্ষ রপ্তানিকারক বলেন, ক্রেতারা ভয়ে আছেন। তারা জানতে চান আমরা সঠিক সময়ে পণ্য সরবরাহ করতে পারব কি না। এ নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। কারণ সঠিক সময়ে পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হলে ক্রেতারা মূল্যছাড় চাইবেন। এতে বহু কারখানা পথে বসে যাবে। উদ্যোক্তারা দিশাহারা হবেন। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন এফবিসিসিআইর সাবেক প্রেসিডেন্ট এ কে আজাদ। দেশের খ্যাতনামা এই শিল্পোদ্যোক্তা বলেন, ঈদের আগে এখনো অনেক পোশাক কারখানা বোনাস দিতে পারেনি। আবার ছোট ও মাঝারি কারখানাগুলোর অর্ধেক বেতন দিতে পারেনি। এরপর লকডাউনে তিন সপ্তাহ কারখানা বন্ধ থাকলে শিল্প ব্যাপক ঝুঁকিতে পড়বে। সময়মতো পণ্য সরবরাহ অসম্ভব হয়ে পড়বে। আবার এখন ক্রেতাদের ক্রয়াদেশ না নিতে পারলে, তারা অন্য দেশে চলে যাবেন। তার মতে, তৈরি পোশাকশিল্প একটি দক্ষ ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হয়। কারখানায় শ্রমিকরা অত্যন্ত সুশৃঙ্খল থাকেন। তারা দীর্ঘ ছুটিতে বাড়ি গেলে করোনা সংক্রমণ নিয়ে ঢাকায় ফিরবেন। তখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থা আমাদের দেশে নেই। এই শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতা বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে জীবনের প্রয়োজনে জীবিকা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সবকিছুর সমন্বয় করতে হবে। সবার আগে পণ্য উৎপাদন, বিক্রয় ও ক্রয় এবং সেবাসমূহ সচল রাখতে হবে। এই লক্ষ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সরকার ও ব্যবসায়ীদের যৌথ মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে। তার মতে, সরকারকে সতর্কতার সঙ্গে জীবনের পাশাপাশি জীবিকা টিকিয়ে রাখতে হবে। এটা না করতে পারলে দেশে দারিদ্র্য বাড়বে। তা সামাল দিতে আবার সরকারকেই হিমশিম খেতে হবে। এ জন্য সরকারকে আরও বড় ধরনের ভূমিকা নিতে হবে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা বা এসএমইরা ঋণ সহসাই পাচ্ছেন না।

এফবিসিসিআইর সাবেক এই প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা অপ্রতুল। লকডাউনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্ষুদ্র আয়ের মানুষ। রিকশাচালক, ঠেলাগাড়ি আর ভ্যানচালকদের মতো নিত্য আয়ের মানুষ খুব কষ্টে আছেন। দিনমজুরদের আয় নেই। তাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর সাহসী ও দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে গতিশীলতা ফিরে এসেছে। যদিও কিছু খাত এখনো সম্পূর্ণ সচল হয়নি। তবুও আশার কথা- সরকারপ্রধান এ ব্যাপারে তীক্ষè দৃষ্টি রাখছেন এবং সময়ানুযায়ী দরকারি সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করছেন না।

এ কে আজাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক করতে দেওয়া হয়েছিল এবং এটা সফল হয়েছে। বড় ব্যবসায়ীদের খুব একটা সমস্যা নেই। তারা কমবেশি ভালো আছেন। কিন্তু ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ- এসএমই খাত কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। তবে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ছোট ব্যবসায়ীদের পাশে ব্যাংকগুলো নেই।

সর্বশেষ খবর