রবিবার, ২৫ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

বে-টার্মিনালের কাজে আসছে গতি

স্পেশাল জেটি, ব্রেক ওয়াটারসহ আধুনিক সুবিধা চান ব্যবসায়ীরা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

বে-টার্মিনালের কাজে আসছে গতি

অবশেষে গতি আসছে বে-টার্মিনাল নির্মাণ তৈরির কাজে। ভূমি জটিলতার অবসান হওয়ার পর পুরোদমে নির্মাণকাজ শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। বিশ্বের আধুনিক সব টার্মিনালের মতো এ প্রকল্পেও স্পেশাল জেটি, ব্রেক ওয়াটারসহ উন্নত বন্দরের সব সুবিধা চান ব্যবহারকারীরা। চট্টগ্রাম বন্দরের মেগা প্রকল্প বে-টার্মিনাল চালু হলে চাপ কমবে চট্টগ্রাম বন্দরের। কমবে জাহাজ-জট। হ্রাস পাবে আমদানি-রপ্তানি ব্যয়। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘ভূমি জটিলতা অবসান হওয়ায় আশা করছি চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন বন্দরকে ভূমি দ্রুত সময়ের মধ্যে বুঝিয়ে দেবে। এরপর বে-টার্মিনালের কাজ পুরোদমে শুরু করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরই মধ্যে বন্দরের কেনা ভূমিতে ভরাট, ইয়ার্ড নির্মাণসহ কিছু কাজ চলছে। বাকি ভূমিতে সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে।’ বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, ‘আগামী ১০০ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে বে-টার্মিনাল নির্মাণ করতে হবে, যাতে স্পেশাল জেটি, ব্রেক ওয়াটারসহ আধুনিক সব সুবিধা রাখা দরকার।’ জানা যায়, দেশের আমদানি-রপ্তানির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দরের গতি বাড়াতে বে-টার্মিনাল তৈরির উদ্যোগ নেয় সরকার। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চট্টগ্রাম বন্দরের অদূরে পতেঙ্গা হালিশহর এলাকার সাগর উপকূলে টার্মিনালটি নির্মাণের জায়গা নির্বাচন করা হয়। কিন্তু ভূমি জটিলতার কারণে কিছু সময়ের জন্য থমকে যায় বে-টার্মিনাল তৈরির কাজ। সম্প্রতি ভূমি-              সংক্রান্ত  জটিলতার অবসান হওয়ার পর বে-টার্মিনাল তৈরির কাজ পুরোদমে শুরুর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরই মধ্যে নিজস্ব অর্থায়নে কেনা ৬৭ একক ভূমি উন্নয়ন কাজ শুরু করেছে বন্দর, যাতে মাটি ভরাট, ইয়ার্ড নির্মাণ এবং ট্রাক টার্মিনাল তৈরির কাজ এগিয়ে চলছে। জটিলতার অবসান হওয়া বাকি ৮০৩ একক ভূমি দ্রুততম সময়ের মধ্যে বন্দরকে বুঝিয়ে দেবে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন। এরই মধ্যে ওই ভূমিতে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। ভূমি হস্তান্তর এবং সম্ভাব্যতা যাচাই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর শুরু হবে বে-টার্মিনালের ভূমি উন্নয়ন কাজ। দীর্ঘদিনের ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতাসহ নানা কারনে শম্বুকগতিতে চলা এ টার্মিনালের কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করার দাবি বন্দর ব্যবহারকারীদের। তাদের দাবি, আগামী ১০০ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে বে-টার্মিনাল তৈরি করা উচিত, যাতে থাকবে স্পেশাল জেটি, ব্রেক ওয়াটার, এলপিজি, এলএনজি টার্মিনালসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা।

দেশের সমুদ্রপথের আমদানি-রপ্তানির প্রায় ৯৩ শতাংশই হ্যান্ডলিং করে চট্টগ্রাম বন্দর। বন্দরের ওপর চাপ কমাতে সরকার বে-টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষা প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ বে-টার্মিনালে ২৪ ঘণ্টাই জাহাজ আসা-যাওয়া করতে পারবে। প্রকল্পে থাকবে  রেল, সড়ক, নৌ ও বিমানবন্দর ব্যবহারের সুবিধা। জাহাজ বার্থিংয়ের  ক্ষেত্রে নাইট নেভিগেশনসহ ২৪ ঘণ্টা জাহাজ চলাচল করতে পারবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে কনটেইনারের ভাড়া প্রতি এককে ২ হাজার ডলার থেকে ১ হাজার মার্কিন ডলারে নেমে আসবে। ফলে জাহাজ ভাড়া কমে যাবে। আমদানি ব্যয় হ্রাস পেলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় ঘটবে। কমবে বন্দরে জাহাজ-জট। প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা বাজেটের বে-টার্মিনালটি চালু হবে ২০২৬ সালের মধ্যে। বাস্তবায়িত হলে কনটেইনার রাখা যাবে ৫০ লাখেরও বেশি।

সর্বশেষ খবর