রবিবার, ২৫ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

চিরনিদ্রায় শায়িত ফকির আলমগীর

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

চিরনিদ্রায় শায়িত ফকির আলমগীর

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের ফুলেল শ্রদ্ধার পর গতকাল দুপুর আড়াইটায় খিলগাঁও তালতলা কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর। দাফনের পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপসের পক্ষে তাঁর কবরে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এর আগে বেলা ১১টায় খিলগাঁওয়ের পল্লীমা সংসদে প্রথম জানাজার আগে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করা হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই কণ্ঠযোদ্ধাকে। এরপর সর্বস্তরের জনসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দুপুর ১২টায় তাঁর মরদেহ নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাল-সবুজের পতাকায় মুড়িয়ে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে সেখানে ফুলেল শ্রদ্ধায়  মুক্তিযোদ্ধা এই শিল্পীকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানায় সর্বস্তরের জনসাধারণ। শহীদ মিনারে শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানায় রাজনীতিবিদ, সংস্কৃতিকর্মী, শিল্পী, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। একদিকে লকডাউন, অন্যদিকে শ্রাবণের জুম বৃষ্টি। সবকিছুকে উপেক্ষা করে গণমানুষের শিল্পীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে এসেছিলেন সর্বস্তরের মানুষ।

এ পর্বের শুরুতেই আওয়ামী লীগের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

আরও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অভিনয়শিল্পী শংকর সাঁওজাল প্রমুখ।

প্রাতিষ্ঠানিক ও সাংগঠনিকভাবে শ্রদ্ধা জানায় শিল্পকলা একাডেমি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ, পথনাটক পরিষদ, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাকের পার্টি,  বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, বাংলাদশ মহিলা পরিষদ, দনিয়া সাংস্কৃতিক জোট, মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়, আদি ঢাকা সাংস্কৃতিক জোট, যুব ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয়  খেলাঘর আসর, জাসদ, ছাত্র মৈত্রী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃৃতিক জোটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফকির আলমগীরের স্ত্রী সুরাইয়া আলমগীর, ছেলে মাশুক আলমগীর ও ভাই ফকির সিরাজ।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের কিংবদন্তি শিল্পী ফকির আলমগীর হঠাৎ চলে যাওয়ায় গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি শুধু একজন গণসংগীতশিল্পী ছিলেন তা নয়, তিনি বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কাজ করেছেন।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ফকির আলমগীর বাংলাদেশের মা ও মাটির কথা বলতেন। অনেক গানের মাধ্যমে তিনি একই সঙ্গে মা, মাটি এবং মানুষের প্রতি যে ভালোবাসা প্রকাশ করে গেছেন তিনি চলে গেলেও তাঁর সেই গানগুলো রয়ে যাবে শ্রোতাদের হৃদয়ে।

ফকির আলমগীরের স্ত্রী সুরাইয়া আলমগীর বলেন, বিপ্লবী কণ্ঠে তিনি গণসংগীত গেয়েছেন। রেখে গেছেন গণসংগীতের সেই প্রজ্বলিত মশাল। তাঁর গাওয়া কৃষক-শ্রমিকের গান, আন্দোলন-সংগ্রামের গানগুলো যেন রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করা হয়। তাহলে এই শিল্পী সম্পর্কে জানতে পারবে আগামী প্রজন্ম। অন্যদিকে, মৃত্যুর দ্বিতীয় দিন গতকাল শনিবারও শোক প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনরা।

এ দিন শোক প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বি মিয়া, চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. মাইনুল হোসেন খান প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর