শনিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

সমুদ্রে ওড়া গাংচিল দুর্গাপুরে উদ্ধার

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

সমুদ্রে ওড়া গাংচিল দুর্গাপুরে উদ্ধার

সামুদ্রিক একটি গাংচিলকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে নেত্রকোনার দুর্গাপুরের বন্যপ্রাণী রক্ষাকারী সংগঠন সেভ দ্য অ্যানিমেলস অব সুসং। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পৌরসভার শিবগঞ্জ এলাকার একটি বাসা থেকে গাংচিলটিকে উদ্ধার করা হয়। এটি বড় আকৃতির কালো মাথার গাংচিল। এ এলাকায় এমন পাখি এর আগে দেখেনি কেউ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে টানা বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বেড়েছে সোমেশ্বরী নদীর পানি। বুধবার রাতে নদীতে ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে লাকড়ি সংগ্রহ করতে গিয়ে পাখিটিকে পানিতে ভেসে আসতে দেখে এক ব্যক্তি (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)। রাতেই তীব্র স্রোত কাটিয়ে পাখিটিকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যান তিনি। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় খোকন মুন্সি নামের একজনকে নিয়ে পাখিটিকে বিক্রি করতে দুর্গাপুর বাজারে আসেন তারা। শহরের তেরি বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে পাখিটিকে নিয়ে ঘোরাঘুরির একপর্যায়ে স্থানীয় পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেভ দ্য অ্যানিমেলস অব সুসং সদস্যদের সামনে পড়েন বিক্রেতারা। এ সময় তাদের জেরার মুখে তাৎক্ষণিক পাখি নিয়ে পালিয়ে যান। পরে স্বেচ্ছাসেবকরা স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করলে পাখি উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়।

এদিকে পাখিটিকে নিয়ে সোমেশ্বরী নদী পার হওয়ার সময় পৌর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাশিদ মন্ডলের কাছে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করে গা ঢাকা দেন পাখি বিক্রেতা। পাখিটিকে উদ্ধারে অভিযানের খবর স্থানীয় কাউন্সিলর জানতে পেরে উপজেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকদের ফোন করে পাখিটি তার হেফাজতে রয়েছে বলে জানান তিনি। পরবর্তীতে প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবকরা পাখিটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। কাউন্সিলর জানান, হাসপাতাল থেকে পায়ের ড্রেসিং করে বাড়ি ফেরার পথে সোমেশ্বরী নদীর ঘাটে এক ব্যক্তির হাতে পাখিটিকে দেখতে পাই। প্রথমদিকে এটি বালিহ^াস ভেবে বিক্রেতাকে দাম জিজ্ঞাসা করি। শুরুর দিকে বিক্রেতা তিন হাজার টাকার ওপরে এর দাম চাইলেও অনেক দরদাম করে ১ হাজার ৫০০ টাকায় পাখিটিকে কিনে বাড়িতে নিয়ে আসি।

সেভ দ্য অ্যানিমেলস অব সুসং সংগঠনের সভাপতি রিফাত আহমেদ রাসেল জানান, কালো মাথার এই গাংচিলটি নিয়ে বিক্রেতা বাজারে ঘোরাঘুরির খবর শুনতে পেরে আমরা তাৎক্ষণিক পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে খোঁজতে শুরু করি। একপর্যায়ে আমরা পাখিটিকে দেখতে পেলে বিক্রেতা কৌশলে অপর এক ব্যক্তিকে দিয়ে অন্য স্থানে পাঠিয়ে দেন। পরে আমরা বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও দুর্গাপুর থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করলে পাখি উদ্ধারের জন্য তারা উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

তিনি জানান, পাখিটির অবস্থা খুবই খারাপ। বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং পাখিটি দাঁড়াতে পারছে না। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি এবং সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আমরা এর সেবাযত্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। সুস্থ হলে পাখিটিকে যথাস্থানে অবমুক্ত করে আসব।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিব উল আহসান জানান, সেভ দ্য অ্যানিমেলস অব সুসং সেবাযত্ন করছে পাখিটির। পুরোপুরি সুস্থ হলে অবমুক্ত করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর