রবিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

বিদেশে নিয়ে খুন দেশে গ্রেফতার

মির্জা মেহেদী তমাল

বিদেশে নিয়ে খুন দেশে গ্রেফতার

ভারতের বনগাঁয়ের একটি হোটেল শ্যামাপ্রসাদ লজ। এক সকালে সেই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে নারীর লাশ উদ্ধার হয়। আর সেই নারীর বাড়ি বাংলাদেশ। নাম আসমা।

তিনি যশোর শহরের আরবপুর পাওয়ার হাউসপাড়া এলাকার শাহানুর ইসলামের স্ত্রী। তবে তিনি শাহানুরের সঙ্গে থাকতেন না। থাকতেন যশোর সদরের নওদাগাঁ এলাকার মঞ্জু নামে এক শিক্ষকের বাড়িতে। আসমা তার খালা মনোয়ারা বেগমের সঙ্গে ডাক্তার দেখানোর জন্য কলকাতার উদ্দেশে রওনা হন। যশোর বর্ডার পেরিয়ে বনগাঁয়ের হোটেলে ওঠেন। হোটেলের রেজিস্ট্রারে দেখা যায়, তাদের সঙ্গে আরেকজন ছিলেন। নাম কাশেম। ঘটনার পর থেকে তিনি লাপাত্তা। বনগাঁ পুলিশ আসমার ঠিকানা অনুযায়ী যোগাযোগ করেন। আসমার খালা মনোয়ারকে জেরা করে পুলিশ। ঘটনাটি  ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারির। এ ঘটনায়  ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনার বনগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। আসমার খালা মনোয়ারা জানান, ওই হোটেলে আসমার সঙ্গে দেখা হয় তার পরিচিত আবুল কাশেমের। এরপর কাশেম তাকে শপিং করতেও নিয়ে যান। পরদিন সকালে হোটেলের তালাবদ্ধ কক্ষে আসমা ইসলামের মৃতদেহ পাওয়া যায়। কাশেমকে পাওয়া যায় না। এদিকে আসমার স্বজনরা বনগাঁ থানা থেকে কাগজপত্র সংগ্রহ করে এবং ভাই আজিম উদ্দিন ৩০ জানুয়ারি হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কাশেমের বিরুদ্ধে যশোরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিটিশন দাখিল করেন। আদালতের নির্দেশে যশোর কোতোয়ালি    থানায় মামলা (নম্বর-০৯/০৫.০২.২০২০, ধারা-৩৬৪/৩০২/২০১/৩৪) হয়। মামলাটি ওই বছরই ১৪ মে পুলিশ সুপার জেলা গোয়েন্দা শাখায় তদন্তের জন্য ন্যস্ত করেন। আবুল কাশেমকে (৫১) গ্রেফতার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামির অবস্থান শনাক্ত করেন ছদ্মবেশে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ। ইন্সপেক্টর সোমেন দাসের নেতৃত্বে এসআই মফিজুল ইসলামসহ একটি দল ঘটনার পাঁচ মাস পর ৩০ মে রাত ৩টার দিকে ঢাকার মিরপুর পল্লবী বাউনিয়াবাদ বস্তি বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে কাশেমকে গ্রেফতার করেন।

একই সঙ্গে জব্দ করা হয়েছে ভিকটিমের মোবাইল ফোন ও তার পাসপোর্ট। এরপর তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আসমা ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ঢাকার মানিকনগর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কাশেম জানায়, আসমার সঙ্গে তার পরকীয়া প্রেম ছিল। এসব কারণে ২০১৩ সালে আসমাকে তার স্বামী শাহানুর তালাক দেন। পুনরায় আসমা তার স্বামী শাহানুরের সঙ্গে ঘর-সংসার করার সিদ্ধান্ত নিলে কাশেম তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং একপর্যায়ে ভারতে নিয়ে হোটেলে হত্যা করে। আবুল কাশেম পুরাতন কসবা গাজীরঘাট রোড এলাকার বশির মিয়ার ছেলে।

সর্বশেষ খবর