শুক্রবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
করোনা সংকট মোকাবিলা

বেসরকারি সংস্থার প্রতি টিআইবির ১০ সুপারিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাকালীন সংকট মোকাবিলায় সহজ শর্তে, স্বল্প সময়ে, কম সুদে ঋণ দেওয়ার সুপারিশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। প্রতিষ্ঠানটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে তাদের ঋণগ্রহীতা সদস্যদের উৎপাদিত পণ্য ন্যায্যমূল্যে বাজারজাতকরণের সুবিধা দেওয়াসহ ১০ দফা সুপারিশ করেছে। গতকাল সংস্থাটি এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ প্রকাশ করে। সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি পরিচালিত ‘করোনা সংকট মোকাবিলায় সাড়াদানকারী বেসরকারি সংস্থাসমূহের ভূমিকা : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই সুপারিশগুলো উল্লেখ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল হান্নান সাখিদার। এতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোর কার্যকর অংশগ্রহণ এবং বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তরণের জন্য গবেষণার ফলাফলের আলোকে ১০টি সুপারিশ প্রস্তাব করা হলো। ১. করোনাকালে তৃণমূল পর্যায়ে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহের বিভিন্ন কার্যক্রমের (সচেতনতা বৃদ্ধি, খাদ্য সহায়তা, স্বাস্থ্যসেবা, নগদ অর্থ সহায়তা এবং ত্রাণ তৎপরতা) ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং সমন্বয় সাধন করতে হবে। ২. বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কর্তৃক করোনাকালীন গৃহীত কর্মসূচির ধরন, আওতা, ব্যয়, উপকারভোগীর তথ্য ইত্যাদি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ ও নিয়মিতভাবে হালনাগাদ করতে হবে। ৩. করোনাকালীন মাঠপর্যায়ে বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক পরিচালিত কার্যক্রম বিশেষত উপকারভোগীদের ত্রাণ সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তিতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে তদারকি সংস্থা কর্তৃক মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। ৪. কার্যক্রম বাস্তবায়নে সমন্বয়হীনতা নিরসনে তদারকি সংস্থা কর্তৃক উপকারভোগীদের তথ্য সংবলিত একটি সমন্বিত ডাটাবেজ ও ডিজিটাল ম্যাপ তৈরি করতে হবে। ৫. যে কোনো দুর্যোগ পরিস্থিতি সফলভাবে মোকাবিলায় সরকারকে শুরু থেকেই কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের সব এনজিও নেটওয়ার্ক/প্ল্যাটফরমকে সঙ্গে নিয়ে একটি যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। ৬. করোনা সংকট মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে সরকার ও দাতা সংস্থাগুলোর কর্মপরিকল্পনায় স্থানীয় পর্যায়ের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে এবং কর্মসূচিতে অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য জীবিকায়ন ও সামাজিক সুরক্ষা খাতের আওতা বৃদ্ধি করতে হবে। ৭. বিভিন্ন দুর্যোগে বেসরকারি সংস্থা কর্তৃক সাড়া প্রদান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকার কর্তৃক এবং দাতা সংস্থা কর্তৃক দুটি ভিন্ন তহবিল গঠন করতে হবে। ৮. বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বিবেচনায় প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিশেষ করে টিকা নিবন্ধন কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। ৯. আর্থিক ঝুঁকিতে পড়া স্থানীয় পর্যায়ের সংস্থাগুলোকে টিকে থাকার জন্য সরকার ও দাতা সংস্থা কর্তৃক নীতি সহায়তা ও আর্থিক প্রণোদনা দিতে হবে। ১০. ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে করোনাকালীন সংকট মোকাবিলায় সহজ শর্তে, স্বল্প সময়ে, কম সুদে ঋণ প্রাপ্তির ধারাবাহিকতার পাশাপাশি ঋণগ্রহীতা সদস্যদের উৎপাদিত পণ্য ন্যায্যমূল্যে বাজারজাতকরণের সুবিধা প্রদান করতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর