অংশীদারকে ঠকানোর অভিপ্রায়ে নিউইয়র্কের হোমকেয়ার ও ইন্স্যুরেন্স ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কর্তৃক পার্থ গুপ্তকে পুলিশে দিয়ে হেনস্থার চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটিত হয়েছে। ১৪ জানুয়ারি শুক্রবার নিউইয়র্কের ডেইলি নিউজ পত্রিকায় অনলাইন এডিশনে ‘ফটোশপের কেরামতিতে ফেসবুকের ছবিতে পিস্তল বসিয়ে ব্যবসায়ী পার্টনারকে হয়রানির মামলা খারিজ করল কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি’ শীর্ষক সংবাদে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পার্থ গুপ্ত (৪৪) শাহনেওয়াজকে হত্যার হুমকিতে টেক্সট মেসেজ পাঠিয়েছিলেন বলে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। সে অভিযোগে অক্টোবরের ৪ তারিখ পার্থকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। সে সময় শাহনেওয়াজ আরও অভিযোগ করেছিলেন, পার্থ গুপ্ত নাকি তাকে জ্যাকসন হাইটসে একটি অনুষ্ঠানের পর পিস্তল দেখিয়ে গুলি করার হুমকি দিয়েছেন। এর সমর্থনে পার্থ গুপ্তর ছবির পাশে বিছানায় পিস্তলের ছবি পুলিশকে দেখানো হয়। অভিযোগটি বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিস তদন্ত শুরু করেছিল। ১২ জানুয়ারি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির আহ্বানে শাহনেওয়াজের সব অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্টের বিচারক। এ প্রসঙ্গে পার্থ গুপ্তর অ্যাটর্নি ক্যারি লন্ডন শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, পিস্তলের পাশে বসে থাকা পার্থ গুপ্তকে হাসতে দেখা যায়। গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে সহজেই অনুমিত হয় যে, ফটোশপের কেরামতিতে ফেসবুকের হাস্যোজ্জ্বল পার্থ গুপ্তের ছবির পাশে পিস্তল বসিয়ে রাখা হয়েছে। ফেসবুকের ছবি এবং শাহনেওয়াজের সরবরাহ করা পিস্তলসহ সেই ছবিটিও প্রদর্শন করা হয় গণমাধ্যমে। এ কারণেই কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি শাহনেওয়াজের মামলাটি খারিজের আবেদন করেন। এর নেপথ্যে আর কোনো কারণ আছে কি না তা বলতে পারেননি অ্যাটর্নি লন্ডন।
পার্থ গুপ্ত শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্ষুব্ধ চিত্তে বলেন, ‘এমন বানোয়াট অভিযোগে আমাকে হয়রানির অপচেষ্টা করা হয়। তবে একটি মিথ্যাকে শতবার চেষ্টা করেও সত্যে পরিণত করা সম্ভব হয় না- এটা তারই প্রমাণ। আমি প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ রাখব এমন আচরণে লিপ্তদের ব্যাপারে সজাগ থাকতে।’
অ্যাটর্নি লন্ডন উল্লেখ করেন, ‘ফটোশপে তৈরি করা ছবিকে যে সব পুলিশ এবং সরকারি কৌঁসুলি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছেন। তারা আসলে অন্ধ ছিলেন। উল্লেখ্য, পার্থ গুপ্ত একজন যন্ত্রশিল্পী হিসেবে কমিউনিটিতে সমধিক পরিচিত। পাশাপাশি শাহনেওয়াজের ‘হোমকেয়ার ব্যবসা’রও পার্টনার ছিলেন। করোনার পরিপ্রেক্ষিতে ফেডারেল সরকার হোমকেয়ার ব্যবসাতেও পে-চেক প্রটেকশন প্রোগ্রামে (পিপিপি) বিপুল অর্থ প্রদান করেছে নামমাত্র সুদে এবং এ অর্থ প্রদানের শর্ত যথাযথভাবে পূরণ করলে কখনই তা ফেরত দিতে হবে না। শাহনেওয়াজ এ খাতে মোটা ঋণ নিয়েছেন, যার লভ্যাংশ পার্থ গুপ্তরও পাওয়ার কথা। পার্থ অভিযোগ করেছেন, ‘সেই লভ্যাংশ চাইতে গেলেই বিরোধ বাধে শাহনেওয়াজের সঙ্গে। সেই বিরোধের পরিপ্রেক্ষিতেই এমন ঘটনা সাজানো হয় আমাকে হয়রানি করতে, যাতে আমি আমার ন্যায্য হিস্যা আদায় থেকে বিরত থাকি।’ পার্থ গুপ্ত গ্রেফতার হওয়ার পর কমিউনিটির অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ব্যবসায়িক পার্টনারকে ঠকানোর অভিপ্রায়ে এমন অভিযোগ গঠন করা সমীচীন হয়নি বলেও অনেকে সে সময় মন্তব্য করেছিলেন। এখন মামলাটি খারিজ হওয়ায় পার্থ গুপ্ত চাইছেন তার ন্যায্য হিস্যা শাহনেওয়াজের কাছে আদায়ের পাশাপাশি ‘মানহানির জন্য শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা’ করতে।