শনিবার, ২ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

বাংলাদেশ ছাড়লেন মুহিবুল্লাহ পরিবারের ১১ সদস্য

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কানাডার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহর পরিবারের ১১ সদস্য।

টার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে বৃহস্পতিবার রাতে তারা রওনা হন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। ওই সূত্রমতে, ওই ১১ জনের মধ্যে রয়েছেন মহিবুল্লাহর স্ত্রী নাসিমা খাতুন, ৯ ছেলেমেয়ে এবং এক মেয়ের জামাই। তাদের শরণার্থী মর্যাদা দিয়ে কানাডার গভর্নমেন্ট অ্যাসিসটেন্স প্রোগ্রামের আওতায় নেওয়া হচ্ছে।

কুতুপালং-১ (ইস্ট) লম্বাশিয়া ক্যাম্পের ডি-৮ ব্লকে গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহ। রোহিঙ্গাদের কাছে তিনি ‘মুহিবুল্লাহ মাস্টার’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কারণ তিনি মিয়ানমারের মংডুতে স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। জানা গেছে, হত্যাকান্ডের পর থেকেই মুহিবুল্লাহর স্বজন ও অনুসারীরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছাড়ার চেষ্টা করছিলেন। তারা যোগাযোগ রাখছিলেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে। তাদের ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশের বাইরে তৃতীয় কোনো দেশে যাওয়ার। এ ইচ্ছার কথা জাতিসংঘের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থায় তারা জানিয়েছিলেন। সূত্র মতে, বৃহস্পতিবার রাতে বিমানবন্দরে মুহিবুল্লাহ পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশের মানুষ ও সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মুহিবুল্লাহর প্রতিষ্ঠিত স্কুলটির কার্যক্রম যাতে চলমান থাকে, সে জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। কয়েক বছর আগে জীবন বাঁচাতে নিজ দেশ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসে সপরিবারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা হন মুহিবুল্লাহ। সেখানেই গড়ে তোলেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ)। রোহিঙ্গাদের কাছে মুহিবুল্লাহ ছিলেন বাড়ি ফেরার স্বপ্নে বিভোর এক মানুষ। কয়েক বছর ধরে নির্যাতনের মুখে মিয়ানমারে সবকিছু ফেলে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লাখো মানুষের মাঝে সেই স্বপ্ন তিনি বিলিয়ে আসছিলেন। মুহিবুল্লাহর স্বজন ও অনুসারীদের দাবি- দেশে ফেরার এ স্বপ্নই তার ‘কাল’ হয়েছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যে একটা অংশ দেশে ফিরতে চায় না। সশস্ত্র দলটির সঙ্গে ‘মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর যোগাযোগ’ রয়েছে বলেও ক্যাম্পের অনেকের বিশ্বাস। মুহিবুল্লাহ উখিয়ার ১-ইস্ট লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৭ ব্লকে থাকতেন। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে আলোচনায় আসেন তিনি। জেনিভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থায়ও রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুর স্কুলশিক্ষক মুহিবুল্লাহ পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমে ‘রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর’ হিসেবেও পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন।

সর্বশেষ খবর