ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণের প্রতি আস্থা ফেরাতে এবার রাজনৈতিক দলের টেকনিক্যাল পারসনদের সঙ্গে বসছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ প্রথম দফায় জাতীয় পার্টিসহ ১৩ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের ইভিএম দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছে ইসি। আজ বিকাল ৩টায় তাঁদের সঙ্গে ইভিএমের খুঁটিনাটি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করবে নির্বাচন কমিশন। এর আগে আইটি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও এ নিয়ে বৈঠক করেছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। ইসির কর্মকর্তারা  জানিয়েছেন, দেশের নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে তাদের টেকনিক্যাল পারসনসহ ইভিএম যাচাই করে দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছে কমিশন। ইভিএম যাচাইয়ের জন্য ১৯, ২১ ও ২৮ জুন রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচন কমিশনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। টেকনিক্যাল পারসনসহ একটি দল থেকে সর্বোচ্চ চারজনকে আসার অনুরোধ করা হয়েছে। এদিন তাঁরা ইভিএম খুলে যে কোনোভাবে যাচাই-বাছাই করে দেখতে পারবেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সাধারণ সম্পাদককে ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছে ইসি। এ ক্ষেত্রে দলগুলো চার সদস্যের কারিগরি টিম/প্রতিনিধি পাঠাতে পারবে। ২৬ ফেব্রুয়ারি হাবিবুল আউয়াল কমিশনকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। নিয়োগ পাওয়ার পরদিন শপথ নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম দাফতরিক দায়িত্ব পালন শুরু করে নতুন কমিশন। এরপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সংলাপের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। ইে আলোকে ১৩ ও ২২ মার্চ এবং ৬ ও ১৮ এপ্রিল যথাক্রমে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী এবং নাগরিকসমাজ ও গণমাধ্যমের সঙ্গে সংলাপ করে ইসি। পরে পর্যবেক্ষক এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে বসার কথা থাকলেও তার আগেই তাদের ইভিএম যাচাইয়ের জন্য চিঠি পাঠায় ইসি। তবে পরে আবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসবে সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। ইসির করা তালিকা অনুযায়ী ১৯, ২১ ও ২৮ জুন প্রতিদিন ১৩টি করে নিবন্ধিত দল এ সুযোগ পাবে।

আজ যারা ইসিতে আসার আমন্ত্রণ পেয়েছে : সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস।

২৮ জুন যারা আমন্ত্রণ পেয়েছে : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১০০ আসনে ইভিএমে ভোট করার সক্ষমতা রয়েছে ইসির। তবে সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিশন। ইসির হাতে বর্তমানে ১ লাখ ৫৪ হাজার ইভিএম রয়েছে, যা দিয়ে সর্বোচ্চ ১০০ আসনে ভোট করা যাবে।