ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়া রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের দেশে এখনো পুলিশকে ফোর্স হিসেবে দেখা হয়। ফোর্সের মানসিকতা সবসময়ই দমন কিংবা নিয়ন্ত্রণমূলক। ব্রিটিশ আমলের সেই আইন থেকে বের হয়ে পুলিশকে ‘সার্ভিস’ হিসেবে দেখার জন্য আইনের পরিবর্তন করা দরকার। ঔপনিবেশিক সেই কাঠামো ভেঙে দেওয়ার সময় এসেছে। আমরা কখনো ভেবেই দেখি না ১৮৬১ সালে ব্রিটিশরা সেই আইন তৈরি করেছিল আমাদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। কিন্তু তাদের দেশে কি এই আইন মানা হয়? প্রাতিষ্ঠানিক ডেভেলভমেন্ট হচ্ছে না উল্লেখ করে জিয়া রহমান বলেন, একটা সময় ছিল ‘আকাশের যত তারা, পুলিশের তত ধারা’ এমনটাই প্রচলিত ছিল সমাজে। বর্তমানে ওই ধারণার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। পুলিশের কিছু কর্মকর্তা ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে, বেদেপল্লী নিয়ে কাজ করছেন, এটা সত্যিই ভালো দিক। তবে পুলিশ এখনো এলিটিজম থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। রাজনৈতিক নেতা, বড় ব্যবসায়ী, সমাজের প্রভাবশালীদের সেবাই প্রাধান্য পায় পুলিশের সংস্কৃতিতে। মাঝে-মধ্যেই দেখা যায় পদোন্নতি, পদায়ন এবং পদকপ্রাপ্তির জন্য রাজনীতিকরণ, উচ্চপদের যোগাযোগের বিষয়টি প্রাধান্য পায়। এ জন্য অনেক পেশাদার, দক্ষ এবং নিষ্ঠাবান কর্মকর্তা ভালো কাজের পরও বঞ্চিত হন দিনের পর দিন। সেবার মানসিকতায় আসতে হলে পুলিশে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে অন্য কোনো সংস্থার সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। এই অপরাধবিজ্ঞানী আরও বলেন, পশ্চিমা বিশ্বে ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যবাদের উন্নয়ন হচ্ছে। কানাডার পুলিশের দিকেই দেখুন। তারা কতটা জনবান্ধব, পেশাদার? এ জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। পুলিশের বেতনের বিষয়টিও জীবনযাত্রার মানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কি না তা গভীরভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। বিশেষ করে পুলিশের ওসি এবং দারোগাদের এখন যথাযথ প্রশিক্ষণের আওতায় নেওয়া উচিত। কারণ তাদের বেশির ভাগেরই আচরণ কলোনিয়াল।