বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

অনাবৃষ্টিতে লোকসানে পাহাড়ের কচু চাষিরা!

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

অনাবৃষ্টিতে লোকসানে পাহাড়ের কচু চাষিরা!

খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় বর্ষা মৌসুমেও অনাবৃষ্টি। ফলে পাহাড়ের প্রান্তিক কৃষকের আয়ের উৎস ছড়াকচু বা মুখিকচু চাষিরা লোকসান গুনছেন। বীজ বপনের পর থেকে এ বছর প্রয়োজনীয় বৃষ্টি না হওয়ায় অপরিপক্ব অবস্থায় গাছ মরে যাচ্ছে। ফলে কচু চাষিরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে কচু তোলা শুরু করেছেন। কচুর আকার ছোট, ফলন কম, বাজারদর নিম্নমুখী। ফলে লোকসান প্রতি একরে ২৫-৩০ হাজার টাকা। প্রতিনিয়ত কচু চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন কৃষক। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত সময়ে উপজেলার উঁচুনিচু টিলায় ছড়াকচু চাষে প্রান্তিক কৃষকের প্রতিযোগিতা ছিল। কচু চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার নজিরও অনেক। কিন্তু গত দু-তিন বছর আষাঢ়-শ্রাবণের ভরা মৌসুমেও এখানে আশানুরূপ বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। সাধারণত মার্চ-এপ্রিলে কচু চাষে টিলা কুপিয়ে মাটি উর্বর করে লাগানো হয়। আর অক্টোবর-নভেম্বরে পরিপক্ব কচু তোলা হয়। গত বছর উপজেলায় ছড়াকচু চাষ হয়েছিল ৭৮ হেক্টরে। চলতি মৌসুমে হয়েছে ৫০ হেক্টরে।

মানিকছড়ি উপজেলার নাথপাড়া, লেমুয়া, মলঙ্গীপাড়া ও রাঙাপানি সরজমিন দেখা যায়, টিলার পরতে পরতে লাগানো কচু মরে সাবাড়। ফলে চাষিরা নিরুপায় হয়ে দলে দলে শ্রমিক দিয়ে অপরিপক্ব কচু ওঠাচ্ছেন। শ্রমিক মো. ইবরাহিম, আবদুল করিম ও বায়েজিত মোল্লা বলেন, এ বছর খরায় কচু চাষিরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এক কানি (৪০ শতক) জমি বর্গায় চাষ করলে জমি প্রস্তুত, ছড়া লাগানো, খেত পরিচর্যা, ফসল তোলা ও বাজারজাতে মোট ব্যয় ৬০-৬৫ হাজার টাকা। অতি খরায় এবার গড় উৎপাদন (কানিতে) ৫৫-৬০ মণ। বর্তমানে বাজারদর প্রতি মণ ৮০০-৯০০ টাকা। প্রতি কানিতে লোকসান ১০ হাজার টাকা।

চাষি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, গত দুই বছর কচু চাষে কয়েক লাখ টাকা লোকসানের ক্ষত এখনো শুকায়নি। জমি দীর্ঘমেয়াদি বর্গা নেওয়া থাকায় এবারও ৮ একর টিলাভূমিতে মুখিকচু লাগিয়ে খরার কবলে এখন দিশাহারা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসিনুর রহমান বলেন, ‘প্রকৃতি তার গতি পাল্টিয়েছে। না হলে আশপাশে বর্ষা মৌসুমে মাঝারি বৃষ্টি হলেও এখানে একেবারে ভিন্ন চিত্র। অতি খরায় এ বছর প্রান্তিক কৃষক চাষাবাদে চরম বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর