শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মাদক ব্যবসায়ীর তথ্যে আট বছর পর গ্রেফতার খুনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাদক ব্যবসায়ীর দেওয়া তথ্যে গ্রেফতার হলেন রমনা থানা ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবুর রহমান রানা হত্যা মামলার আসামি মো. ইকবাল হোসেন তারেক। এক মাদক ব্যবসায়ীর দেওয়া তথ্যে আট বছর পর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৩ এর একটি দল।

২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি রমনা থানা ছাত্রলীগের তৎকালীন সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান ওরফে রানাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় অন্যতম প্রধান পলাতক আসামি ইকবাল হোসেন তারেক। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার র?্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র?্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, তারেক মাদকসহ একাধিকবার বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হয়েছিলেন। তবে নিজেকে তাহের পরিচয় দিয়ে হত্যা মামলার দায় থেকে বেঁচে যান। তার নামে হত্যা, মাদকসহ চারটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।

মামলার অভিযোগপত্রের তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, তারেক তৎকালীন সুইফ ক্যাবল লিমিটেড নামে ডিশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। প্রতিষ্ঠানটির মালিক কামরুল ইসলাম ও তানভিরুজ্জামান রনির সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা রানার ব্যবসায়িক বিরোধ ছিল। এই বিরোধের জেরে এক পক্ষ আরেক পক্ষের ডিশের ক্যাবল কেটে দিত এবং প্রায়ই মারামারি হতো। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রানা মোটরসাইকেলে করে মগবাজার চৌরাস্তা থেকে মসজিদের পাশের গলিতে প্রবেশ করলে তার মুখে ও মাথায় এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারেকসহ অন্যরা। পরে স্থানীয়রা রানাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। র?্যাব-৩ অধিনায়ক জানান, এ ঘটনার মামলার তদন্ত শেষে ২০১৫ সালে ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এর মধ্যে ১০ জন গ্রেফতার এবং চারজন পলাতক। পলাতকদের মধ্যে ইকবাল হোসেন তারেক একজন। তার নামে ২০২০ সালে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।

গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারেকের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে কর্নেল আরিফ মহিউদ্দীন বলেন, ২০১৪ সালের ২৩ জানুয়ারি রানা হত্যাকাণ্ডের পর তারেক প্রথমে পালিয়ে চাঁদপুরে নিজ বাড়িতে চলে যান। চাঁদপুর বাড়ি হলেও তার বেড়ে ওঠা ছিল যশোরে। তাই তাকে না চেনার সুযোগে নিজেকে তাহের হিসেবে পরিচয় দেন। এর মধ্যে চাষাবাদের চেষ্টা করে সুবিধা করতে না পেরে আবার যশোর চলে যান। কিছুদিন পরিবহন শ্রমিক হিসেবে কাজ করার পর মাদক ব্যবসা শুরু করেন তারেক। ২০১৯ সালে আবার ঢাকায় এসে তাহের পরিচয়ে বিভিন্ন এলাকায় বসবাস শুরু করেন। গার্মেন্ট থেকে পরিত্যক্ত কার্টন সংগ্রহ করে বিক্রির আড়ালে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছিলেন তিনি। সর্বশেষ দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে তার প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ধরা পড়েন তারেক।

 

সর্বশেষ খবর