বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সোনার দোকানে চুরির পর কক্সবাজার ভ্রমণ

চক্রের ১১ জন আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর চাঁদনি চকের সততা জুয়েলার্সে চুরির রহস্য উদ্ঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মঙ্গলবার রাজধানীর হাজারীবাগ, লালবাগ, কামরাঙ্গীর চরে অভিযান চালিয়ে চোর চক্রের ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবির রমনা বিভাগ। এরা সোনার দোকানের স্বর্ণালংকার চুরির পর আনন্দ ভ্রমণে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে চলে যান। ঢাকায় ফিরে চুরি করা বাকি স্বর্ণালংকার বিক্রির সময় ধরা পড়েন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে। গতকাল মিন্টো রোডে ডিবির কম্পাউন্ডের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ। তিনি বলেন, চক্রের হোতা ফরহাদ হোসেন ওরফে চুগি ওরফে আল আমিন প্রায় দুই বছর ধরে ভুক্তভোগী স্বপনের দোকানের পাশের দোকানের কর্মচারী। অতিরিক্ত কাজ হিসেবে স্বপনের দোকানের শাটার খোলা ও বন্ধ করার কাজ করতেন। এজন্য মাসে তাকে ২ হাজার টাকা দেওয়া হত। চুগি কৌশলে স্বপনের দোকানের চাবির নকল তৈরি করে ফেলেন। আর কাজে ফাঁকি দেওয়ার কারণে ৫ সেপ্টেম্বর তার মালিক সঞ্জয় পাল তাকে চাকরিচ্যুত করেন। এরপর তিনি তার সহযোগীদের নিয়ে নকল চাবি দিয়ে স্বপনের দোকানে চুরির পরিকল্পনা করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১০ সেপ্টেম্বর ও ২১ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে মোট চারবার নকল চাবি দিয়ে দোকানের ভিতরে ঢুকে স্বর্ণালংকার চুরি করেন। চুরি করা স্বর্ণালংকার থেকে আংশিক বিভিন্ন সোনার দোকানে বিক্রি করে নিউমার্কেটে তারা ছয় বন্ধু মিলে নতুন জামাকাপড় কেনেন। এরপর কক্সবাজার ভ্রমণে চলে যান। টাকাপয়সা শেষ হলে পুনরায় ঢাকায় এসে বাকি স্বর্ণালংকার বিক্রি করতে গেলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- গ্রেফতারদের কাছ থেকে প্রায় ৬ লাখ টাকা মূল্যের ৭ ভরি ওজনের চারটি সোনার চুড়ি, তিনটি সোনার আংটি ও এক জোড়া কানের দুল উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতাররা হলেন- ফরহাদ হোসেন চুগি, মারুফ, জাহিদ, সাকিব, আবদুল্লাহ স্বপন, আরিফ, তারা মিয়া, শুকুর মিয়া, ফজলু মাতাব্বর, তপন রায় ও ওবায়েদ হোসেন। এর আগে ২৩ সেপ্টেম্বর নিউমার্কেট থানায় সোনার দোকানে চুরির ঘটনায় মামলা করেন ওই দোকানের মালিক স্বপন চৌধুরী। মামলায় একজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৮৩ জনকে আসামি করা হয়। ভুক্তভোগী স্বপন চৌধুরী জানিয়েছেন, ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা থেকে ২১ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে চাঁদনি চক সেন্ট্রাল এসি মার্কেটের ৩ নম্বর বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় ৬৪ নম্বর সততা জুয়েলার্সে চুরির ঘটনা ঘটে। চোর চক্র ওই দোকান থেকে ১০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা মূল্যের সাড়ে ১৩ ভরি সোনা চুরি করে নিয়ে যায়। তিনি ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায় দোকান বন্ধ করেন। পরদিন মঙ্গলবার মার্কেট বন্ধ থাকে। ২১ সেপ্টেম্বর বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে দোকান খোলা হয়। তখন চুরির বিষয়টি টের পান। তালা যেমন লাগিয়েছিলেন তেমনই ছিল। তিনি ধারণা করেন নকল চাবি দিয়ে দোকান খুলে চোর চক্র ভিতরে প্রবেশ করে। দোকানের সামনে তাদের পায়ের ছাপ দেখা গেছে। চুরির বিষয়টি বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) ও চাঁদনি চক বিজনেস ফোরামকেও জানিয়েছেন। ১১ সেপ্টেম্বরও তিনি চুরির বিষয়টি টের পান। তিনি সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পান দুই সহযোগী মিলে ফরহাদ নকল চাবি দিয়ে খুলে দোকানে প্রবেশ করেন। তারা দোকানের ডিসপ্লে থেকে দুটি সোনার চেন, কানের দুল চার জোড়া ও সোনার ঝুমকা এক জোড়া নিয়ে যান।

সর্বশেষ খবর