শিরোনাম
শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ শিকারে জেলেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গত রাত ১২টার পরপরই নৌকা ও ফিশিং ট্রলার থেকে নদী ও সমুদ্রে জাল নিয়ে নেমে পড়েন জেলেরা। এরমধ্যে জেলেদের আজ সকালেই ইলিশ নিয়ে বাজারে হাজির হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মৎস্য বিভাগ জানায়, প্রজনন মৌসুমে মা মাছ রক্ষায় ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এ সময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, কেনাবেচা ও মজুদে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ায় জেলে পরিবারগুলোতে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এদিকে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে একশ্রেণির অসাধু জেলে নির্বিচারে মাছ নিধন করায় এখন নদীতে ইলিশ পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।

প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য- চাঁদপুর : চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার অভয়াশ্রম এলাকায় মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে গত মধ্যরাত থেকে জেলেরা ইলিশ শিকারে নেমেছেন। এদিকে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে একশ্রেণির অসাধু জেলে নির্বিচারে মাছ নিধন করায় এখন নদীতে ইলিশ পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।

চাঁদপুর সদর উপজেলার হানারচর ইউনিয়নের জেলে আলম মোল্লা জানান, মা ইলিশ রক্ষায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা আমরা মেনেছি। কিন্তু একশ্রেণির অসাধু জেলে ঠিকই মা ইলিশ নিধন করে টাকা কামিয়েছেন। বাগেরহাট : শরণখোলা উপজেলার জেলে ইসমাইল হোসেন ও খালেক ফরাজী বলেন, ‘বলেশ্বর নদী ও বঙ্গোপসাগরে আমরা ইলিশসহ অন্যসব মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করি। সরকার এ বছর ২০ কেজির জায়গায় ২৫ কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছে। অথচ আমাদের ২২-২৩ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। শুধু কি চাল দিয়েই সংসার চলে? সঙ্গে আরও অনেকে কিছুই কিনতে হয়। এই ২২ দিনে আমাদের হাতে কোনো টাকা ছিল না।’

লক্ষ্মীপুর : নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেরা নৌকা, জাল মেরামতের কাজ সেরেছেন। আগে থেকেই সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে গত মধ্যরাত থেকে মেঘনা নদীতে নামার কথা লক্ষ্মীপুরের ৬০ হাজার জেলের। ইতোমধ্যেই মেঘনা উপকূলীয় এলাকার ঘাটগুলো সরব হয়ে উঠতে শুরু করেছে।

পাথরঘাটা (বরগুনা) : জালে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ার আশায় বুক বেঁধেছেন জেলেরা। দীর্ঘদিন কর্মহীন অবস্থায় থাকার পর এ নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। দীর্ঘদিন বঙ্গোপসাগরে মাছ আহরণ বন্ধ থাকায় এবার বেশি মাছ পাবেন বলে আশাবাদী জেলেরা।

 

জেলেরা জানান,  ট্রলার ধোয়ামোছা, জাল মেরামত শেষে ট্রলারে উঠানো, ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেই সাগরে যাত্রা করেছেন। শুধু জেলে ও শ্রমিকদের মুখেই হাসি ফুটেনি। পাশাপাশি আড়তদার, পাইকার ও ট্রলার মালিকদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা গেছে। তাছাড়া স্থানীয় মুদি-মনোহারি দোকানিদের মধ্যেও আনন্দ বিরাজ করছে। জেলেরা বলছেন, সাগরে মাছ আহরণ নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। যে কারণে ২২ দিন তারা আর্থিক অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করেছেন। আবার অনেকে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।

রুহিতা গ্রামের আ. করিম, রহমান, মোশারেফসহ একাধিক জেলে বলেন, ‘২২ দিন অলস সময় কাটিয়েছি। এখন অনেক আশা নিয়ে সাগরে যামু, এবার আল্লাহ আমাদের মাছ দেবেন।’ জিনতলা গ্রামের জেলে বাবুল মিয়া ও ইসমাইল বলেন, ‘বাজার-সদায় করা শেষ। জোয়ার আইলেই ট্রলার ছারমু।’ বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, গত সন্ধ্যায় সারিবদ্ধভাবে সাগরে জেলেরা যাত্রা শুরু করেছে। আশা, কাক্সিক্ষত মাছ পাব।

সর্বশেষ খবর