সোমবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

স্পিকার-সিইসি বৈঠকের পর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে জাতীয় সংসদের স্পিকার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বৈঠকের পর এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এদিকে যথাসময়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের এ প্রক্রিয়া আমরা   ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছি। যথাসময়ে নির্বাচন হবে।’ তবে কবে নাগাদ তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে সে বিষয়ে মন্তব্য করেননি এই নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, ‘এভাবে তো বলতে পারব না, যথাসময়ে নির্বাচন হবে। প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আইন অনুযায়ী স্পিকারের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এ প্রসঙ্গে আলাপ হবে।’ আগামী ২৪ এপ্রিলের মধ্যে শেষ হচ্ছে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ। সে ক্ষেত্রে ২৪ জানুয়ারি থেকে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে করতে হবে এ নির্বাচন। সংসদের চলতি অধিবেশন ফেব্রুয়ারির ৯ তারিখ পর্যন্ত চলবে বলে সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বর্তমান সংসদে ৩৫০ আসনের মধ্যে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করার পর সাতটি আসন শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে ছয় আসনের উপনির্বাচন রয়েছে ১ ফেব্রুয়ারি। পরে এ ছয় আসনের ভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে একটি সংরক্ষিত আসনের নির্বাচন হবে। সর্বশেষ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল হয়েছে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি। সেবার ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ থাকলেও একক প্রার্থী হওয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত হন তিনি।’ রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তাদের প্রার্থীর রাষ্ট্রপতি হওয়াটা প্রায় নিশ্চিত। সংবিধানের ১২৩ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- ‘(১) রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ অবসানের কারণে এ পদ শূন্য হইলে মেয়াদ সমাপ্তির তারিখের আগের ৯০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে শূন্য পদ পূরণের জন্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে’। ১৯৯১ সালের রাষ্ট্রপতি আইনের সপ্তম ধারায় বলা হয়েছেÑ নির্বাচনী কর্মকর্তা নির্ধারিত দিন, সময় ও স্থানে মনোনয়নপত্র পরীক্ষা করবেন। প্রার্থী একজন হলে এবং পরীক্ষায় তার মনোনয়নপত্র বৈধ বিবেচিত হলে কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করবে। তবে একাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হলে নির্বাচনের জন্য তাদের নাম ঘোষণা করবে ইসি। একাধিক প্রার্থী হলে সংসদের অধিবেশন কক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা ভোটের আয়োজন করবেন। নির্ধারিত ব্যালট পেপারে পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে নিজের সই দিয়ে তা জমা দেবেন সংসদ সদস্যরা। ভোটের দিন গ্যালারিসহ সংসদ কক্ষে প্রার্থী, ভোটার, ভোট নেওয়ায় সহায়তাকারী কর্মকর্তা ছাড়া সবার প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রিত থাকবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করবে। ভোট শেষে নির্বাচন কমিশনার প্রকাশ্যে ভোট গণনা করবেন। সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্তকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে। আর সমান ভোট পেলে প্রার্থীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে ফল নির্ধারণ করা হবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদ সদস্যদের ভোটে। আর প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাতে নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
হলফনামায় মিথ্যা লিখলে ভোটের পর ইসির করার কিছু থাকে না :  নির্বাচনে কোনো প্রার্থী যদি হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেন, ভোটের আগে ধরা পড়লে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা যেতে পারে; কিন্তু ভোটের পর এমন তথ্য পেলে ইসির ‘করার কিছু থাকে না’ বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান গোলাপকে নিয়ে গতকাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

সর্বশেষ খবর