শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

গ্যাসের দাম পুনর্বিবেচনার দাবি ব্যবসায়ীদের

প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি এফবিসিসিআইর

নিজস্ব প্রতিবেদক

জনস্বার্থে গ্যাসের দাম পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সব খাতের শিল্পের জন্য একইহারে দাম নির্ধারণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় ও জ্বালানি খাতের রাজস্ব সমন্বয়ের মাধ্যমে গ্যাসের মূল্য পুনর্নির্ধারণ চান তারা। একই সঙ্গে উৎপাদন খাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। এফবিসিসিআই সভাপতি গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়, কভিড মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল ও উৎপাদন উপকরণসহ সব খাতে ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে সার্বিক পরিবহন ব্যয় এবং মুদ্রাবিনিময় হার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিচালনা খরচ বেড়েছে। ফলে শিল্প-কারখানা সচল রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি শিল্প খাতে আরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। ব্যবসা পরিচালনার খরচ আরও বেড়ে যাবে। স্থানীয় শিল্প ও রপ্তানি খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মো. জসিম উদ্দিন বলেন, উৎপাদন খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার শর্তে শিল্প খাতের জন্য ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্টে সরবরাহকৃত প্রতি কিউবিক গ্যাসের মূল্য ১৬ টাকার জায়গায় সর্বোচ্চ ২৫ টাকা বা ৫৭ শতাংশ বৃদ্ধি করার প্রস্তাব দিয়েছিল এফবিসিসিআই। সেখানে ক্যাপটিভ খাতে গ্যাসের মূল্য ৮৭ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বৃহৎ শিল্প খাতে গ্যাসের মূল্য বতর্মান ১১ দশমিক ৯৮ টাকা, মাঝারি শিল্পের ১১ দশমিক ৭৮ টাকা ও ক্ষুদ্রশিল্প খাতে ১০ দশমিক ৭৮ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে সার ও চা শিল্প ছাড়া সব খাতের জন্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের মূল্য ৫ দশমিক ০২ টাবা টাকা বৃদ্ধি করে ১৪ টাকা করা হয়েছে। শিল্প মালিকরা বলছেন, শিল্পে ব্যবহার্য গ্যাস ও বিদ্যুতের তীব্র সংকটে কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তৈরি পোশাক, ইস্পাত, সার ও সিরামিক কারখানাগুলোয় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে। গ্যাসের কম চাপ বেশির ভাগ কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, গত ১৪ বছরে ছয় দফায় গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। প্রত্যেকবারই ছোট, মাঝারি ও বড় শিল্পের জন্য আলাদা দাম নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু এবার সেটা অনুসরণ করা হয়নি। এ বিষয়ে পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ভাইস প্রেসিডেন্ট শহীদুল্লাহ আজিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জ্বালানি সংকটের কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। উৎপাদন অনেক কমে গেছে। মেশিন বন্ধ রাখা হচ্ছে। কিছু কারখানা বন্ধও হয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বছরে ৯৯৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে, যার ৪৬ শতাংশ ব্যবহার হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনে, ১৫ শতাংশ শিল্পের জন্য ক্যাপটিভ পাওয়ার প্লান্টে, ১৩ শতাংশ গৃহস্থালি, ৫ শতাংশ সার-কারখানায়, ৪ শতাংশ  সিএনজি, ১ শতাংশ বাণিজ্যিক এবং দশমিক ১০ শতাংশ ব্যবহার হয় চা বাগানে।

সর্বশেষ খবর