শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিরল পাখি চন্দনা টিয়া

আলম শাইন

বিরল পাখি চন্দনা টিয়া

বাংলাদেশের বিরল আবাসিক পাখি ‘চন্দনা টিয়া’। দেখতে ভারি সুন্দর। স্লিম গড়ন। তোতা পরিবারের মধ্যে এ পাখিগুলোই বেশি আকর্ষণীয়। দেহের তুলনায় এদের লেজ অনেকটাই লম্বা। বিচরণ করে শুষ্ক ও আর্দ্র পাতাঝরা বনাঞ্চলে। ম্যানগ্রোভ অরণ্যেও দেখা যায়।

বিশেষ করে ফল এবং বীজজাতীয় শস্য খেতের আশপাশে বেশি নজরে পড়ে। ঝাঁকবেঁধে শস্য খেতে বিচরণ করার কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে এরা। যা খায় তারচেয়ে  বেশি অপচয় করে। কৃষকদের সঙ্গে এদের বৈরিতার কারণ ফসল নষ্ট করা নিয়ে। মাঝে মধ্যে এদের একাকী কিংবা জোড়ায় জোড়ায়ও বিচরণ করতে দেখা যায়। কণ্ঠস্বর কর্কশ। ‘ক্রি-অ্যার’ সুরে ডাকে। কয়েক দশক আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে এ প্রজাতিটির সাক্ষাৎ পাওয়া গেলেও ইদানীং যত্রতত্র নজরে পড়ে না। খাঁচায় বন্দি এবং উঁচু গাছ-গাছালির সংকটের কারণে এদের প্রজননে বিঘ্ন ঘটছে। ফলে প্রজাতিটি দেশে মহাবিপন্ন হয়ে পড়েছে। এদের বৈশ্বিক বিস্তৃতি ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নেপাল, ভুটান, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার পর্যন্ত। অত্রাঞ্চলে এই পাখিগুলো ভালো অবস্থানে রয়েছে।

পাখির বাংলা নাম : ‘চন্দনা টিয়া’, ইংরেজি নাম : ‘অ্যালেক্সএনড্রিন প্যারাকিট’ (Alexandrine Parakeet) বৈজ্ঞানিক নাম : Psittacula eupatria। অনেকে ভুল করে এদেরকে ‘সবুজ টিয়া’ নামেও ডাকে। প্রজাতির দৈর্ঘ্য ৫৬-৬২ সেন্টিমিটার। লেজ ২৯-৩২ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির মধ্যে বিস্তর তফাৎ রয়েছে। পুরুষ পাখি আকারে কিছুটা লম্বা। তাছাড়া পুরুষ পাখির গলার পেছনে এবং ঘাড়ের পাশে রয়েছে গোলাপি বলয়। থুতনির কালো রেখা গলাবন্ধের সঙ্গে মিশেছে। সব দেহ ঘাস-সবুজ রঙের। কেবল ডানার মধ্য পালকে রয়েছে লালপট্টি। স্ত্রী পাখির ক্ষেত্রে গলার পেছনের গোলাপি বলয় নজরে পড়ে না। থুতনির কালো রেখার উপস্থিতি নেই। যুবক চন্দনার ক্ষেত্রেও এ রকমটি নজরে পড়ে। উভয়ের ঠোঁট গাঢ় লাল। ঠোঁটের ডগা কমলা-লাল। চোখের পাতা কমলা-হলুদ, বলয় নীল।

প্রধান খাবার : ফল, ধান, গম, ভুট্টা, ফুলের রস, গাছের কচি পাতা ইত্যাদি।

প্রজনন মৌসুম নভেম্বর থেকে এপ্রিল। গাছের প্রাকৃতিক কোটরে বাসা বাঁধে। তবে প্রথম পছন্দ নারিকেল গাছের কোটর। এ ছাড়াও কাঠঠোকরার পরিত্যক্ত বাসায়ও ডিম পাড়ে। ডিমের সংখ্যা দুই-চারটি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২০-২৪ দিন।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর