মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ওমরায় গিয়ে হারিয়ে যাচ্ছেন অনেকে

নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে গিয়ে অনেক বাংলাদেশি হারিয়ে যাচ্ছেন। গত ২৩ জানুয়ারি জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ হজ অফিসের কাউন্সিলর (হজ) ঢাকায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যে চিঠি পাঠান তাতে এ তথ্য উঠে এসেছে।

ওই চিঠিতে বলা হয়, ২০২২ সালে হজ পরবর্তী সময়ে পবিত্র ওমরাহ পালনের জন্য বাংলাদেশ থেকে অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় অধিক সংখ্যক মুসলিম সৌদি আরব আগমনের সুযোগ পাচ্ছেন। বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশ থেকেও বর্ধিত হারে ওমরাহযাত্রী আগমন করছেন। ফলে মক্কার হারাম এলাকা এবং হারাম সংলগ্ন এলাকাসমূহ সম্প্রতি অত্যন্ত জনাকীর্ণ হয়ে পড়েছে। বিপুলসংখ্যক ওমরাহযাত্রী এবং তাদের পরিবহনকারী যানবাহনের সমাগমে হারাম এলাকায় চলাচল অত্যন্ত কষ্টসাধ্য এবং সময় সাপেক্ষ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে প্রথমবার সৌদি আরবে আগত ওমরাহযাত্রীরা অধিকতর সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। হজ পরবর্তী বিগত কয়েক মাসে ১২৩ জন বাংলাদেশি ওমরাহযাত্রী মৃত্যুবরণ করেছেন এবং অসংখ্য ওমরাহযাত্রী হারিয়ে যাওয়া বা নিখোঁজ হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। হারিয়ে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করে দেখা যায়, ওমরাহযাত্রীরা গাইডের নিয়ন্ত্রণে গ্রুপে চলাচল না করে একাই চলাচলের চেষ্টা করায় এমন ঘটনা ঘটেছে। ওমরাহযাত্রীরা হোটেল থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় অনেক ক্ষেত্রেই পাসপোর্ট সঙ্গে রাখছেন না। তাছাড়া আবাসিক হোটেলের বা ওমরাহ কোম্পানির কোনো তথ্য না নিয়েই অনেক সময় হোটেল থেকে একাকী বেরিয়ে পড়ছেন এবং হোটেলে ফেরত না যেতে পেরে হারিয়ে যাচ্ছেন। চিঠিতে আরও বলা হয়- হারিয়ে যাওয়া যাত্রীদের খুঁজে পাওয়া যেমন দুরূহ, তেমনি হারানো ব্যক্তির কেউ সাক্ষাৎ পেলেও তাকে তার হোটেলে পৌঁছে দেওয়াও কঠিন। হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের অনুসন্ধানের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই স্থানীয় সব থানা, স্থানীয় সব হাসপাতাল এবং অন্যান্য সম্ভাব্য স্থানে ভ্রমণ করা প্রয়োজন হয়ে পড়ছে।

 জেদ্দা থেকে মক্কা ও মদিনায় গমন করে স্বল্পসংখ্যক জনবল এবং সীমিত জ্বালানি দিয়ে এমন কার্যক্রম পরিচালনা করা দুরূহ হয়ে পড়ছে। হারিয়ে যাওয়া ওমরাহযাত্রীদের অভিভাবক, নিকটাত্মীয় ও পরিচিতজন এ কার্যালয়কে (হজ অফিস) হারানো ব্যক্তির অনুসন্ধানের জন্য নানারূপে চাপ সৃষ্টি করছেন এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে খুঁজে না পাওয়ার কারণে এ অফিসকে দায়ী করছেন। এ অবস্থায় ওমরাহযাত্রীদের গ্রুপভিত্তিক সৌদি আরবে প্রেরণ করা যেতে পারে। সৌদি আরবের মক্কা, মদিনার রাস্তাঘাট চেনেন এবং আরবি ভাষা বোঝেন এমন গাইড সঙ্গে থাকতে হবে। সৌদি আরবে আসার পর ওমরাহযাত্রীদের স্থায়ী ঠিকানা, জরুরি যোগাযোগের মোবাইল নম্বর, মক্কা, মদিনায় আবাসিক হোটেলের ঠিকানা, ফোন/মোবাইল নম্বর, মক্কা ও মদিনায় ওমরাহ এজেন্সির প্রতিনিধির নাম ও মোবাইল নম্বর ইত্যাদি উল্লেখিত ছবিসহ আইডি কার্ড আবশ্যিকভাবে সার্বক্ষণিক সঙ্গে রাখতে হবে। পাসপোর্ট সাবধানতার সঙ্গে সংরক্ষণ করতে হবে। কোনো কারণে পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ হজ অফিসে যোগাযোগ করতে হবে এবং এক্ষেত্রে জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল থেকে ট্রাভেল পারমিট গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং ১০৫ সৌদি রিয়াল ফি দিতে হবে বলেও চিঠিতে জানানো হয়।

সর্বশেষ খবর