জুলাই অভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর। গতকাল সুইজারল্যান্ডের জেনেভা থেকে এক বিবৃতিতে সংস্থাটির মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেন, ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় দিয়েছেন। এটি গত বছরের বিক্ষোভ দমনের সময় সংঘটিত গুরুতর অধিকার লঙ্ঘনের এরপর শিকারদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আমাদের অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে নির্দেশনা ও নেতৃত্বের অবস্থানে থাকা ব্যক্তিসহ দোষীদের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী জবাবদিহির মুখোমুখি করার জন্য কয়েকবার দাবি জানিয়েছি। সেই সঙ্গে ভুক্তভোগীদের কার্যকর প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করারও দাবি জানিয়েছি আমরা।
বিচার প্রক্রিয়ার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা এই বিচার প্রক্রিয়ার বিস্তারিত সম্পর্কে অবগত নই। তবে আমরা সবসময় দাবি করেছি যে, যে কোনো জবাবদিহিমূলক কার্যক্রম বিশেষ করে আন্তর্জাতিক অপরাধের অভিযোগ অবশ্যই ন্যায়বিচার ও যথাযথ প্রক্রিয়ার আন্তর্জাতিক মান পূরণ করবে। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ বিচার (আসামিদের) অনুপস্থিতিতে পরিচালিত হয়েছে এবং যার ফলাফলে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুঃখের সঙ্গে উল্লেখ করছি, আমরা সব পরিস্থিতিতেই মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করি।
বিবৃতিতে শামদাসানি আরও জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার ট্যুর্ক আশা প্রকাশ করেছেন যে বাংলাদেশ সত্য উদ্ঘাটন, ক্ষতিপূরণ এবং ন্যায়বিচারের একটি সমন্বিত প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাবে।
এর মধ্যে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডসম্মত, অর্থবহ ও রূপান্তরমূলক নিরাপত্তা খাত সংস্কার থাকা উচিত, যাতে এসব লঙ্ঘন ও নির্যাতন পুনরায় না ঘটে। এই প্রচেষ্টায় সরকার ও বাংলাদেশের জনগণকে সহায়তা করতে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর প্রস্তুত রয়েছে। হাইকমিশনার সকল পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং এসব ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সকলকে সংযম প্রদর্শনের অনুরোধ করেছেন।