সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

লোকারণ্য বইমেলা

মোস্তফা মতিহার

লোকারণ্য বইমেলা

মেলার ১২তম দিনে গতকাল বইমেলা ছিল লোকে লোকারণ্য। আগতদের বেশির ভাগের হাতেই ছিল বই। বিকাল ৩টায় মেলার প্রবেশদ্বার খোলার পর থেকে বইপ্রেমীদের আগমন ঘটতে থাকে। সন্ধ্যায় লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে মেলা। এদিন শুধু দর্শনার্থীরাই মেলায় আসেননি, প্রকৃত বইপ্রেমীদের পদচারণায় ভিন্ন এক ভালো লাগার আবহ ছিল মেলাজুড়ে। স্টল ও প্যাভিলিয়ন ঘুরে ঘুরে এদিন মেলায় আগতরা কিনেছেন প্রিয় লেখকের পছন্দের বই। অন্যবার শুধু ফিকশনধর্মী বই বেশি হলেও এবার নন-ফিকশন বইও পাঠকদের সমাদর পেয়েছে। বিকালে মেলাপ্রাঙ্গণে কথা হয় রাজধানীর বাড্ডার শাহজাদপুর থেকে আসা উম্মে হাবীবা প্রীতিলতা নামের এক তরুণীর সঙ্গে। মেলার ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট সংলগ্ন গেট বন্ধ দেখে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, নিরাপত্তার নামে পুলিশের বাড়াবাড়ি মেলার পরিবেশকে বিঘিœত করেছে। পুলিশের বাড়াবাড়ির কারণে ভবিষ্যতে মেলায় আসব কিনা সন্দেহ আছে। বাংলা একাডেমি মেলার আয়োজক হয়েও পুলিশের এ বাড়াবাড়ি বন্ধ করতে পারছে না। এ অবস্থার অবসান হওয়া দরকার। বাংলা একাডেমিকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

ইমদাদুল হক মিলনের ‘যে জীবন আমার ছিল’ : প্রকাশনা সংস্থা অনন্যা প্রকাশ করেছে কালের কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ও জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের ‘যে জীবন আমার ছিল’। বইটি এক অর্থে ইমদাদুল হক মিলনের আত্মজীবনী, অন্য অর্থে ‘স্মৃতিকথা’। জীবনের পরতে পরতে লুকিয়ে থাকা বহু স্মৃতির আনাগোনা লেখকের লেখায় উঠে এসেছে। শৈশব থেকে বর্তমান সময়ের নানা বিষয় বইটিতে শৈল্পিকভাবে উপস্থাপন করেছেন লেখক ইমদাদুল হক মিলন। এবারের মেলায় বইটি অন্যতম বেস্ট সেলার বই হিসেবে এরই মধ্যে পাঠকদের সমাদর অর্জন করেছে বলে জানিয়েছেন প্রকাশক মনিরুল হক। বিকালে মেলার অনন্যা প্যাভিলিয়নে বইটি কিনতে পাঠকদের দীর্ঘ লাইন লক্ষ্য করা গেছে। পাঠকদের মাত্রাতিরিক্ত চাহিদার কারণে খুব শিগগিরই মেলায় বইটির পরবর্তী সংস্করণ চলে আসবে বলেও জানান প্রকাশক। ধ্রুব এষের প্রচ্ছদে ২৯৬ পৃষ্ঠার এ বইটির দাম ৫৫০ টাকা।

নতুন বই : বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মেলার ১২তম দিনে নতুন বই এসেছে ৭৯টি।   এ পর্যন্ত মেলায় মোট নতুন বই এসেছে ১ হাজার ২৯৫টি।

মূল মঞ্চ : বিকাল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ : হাসান হাফিজুর রহমান এবং স্মরণ : হাবীবুল্লাহ সিরাজী’ শীর্ষক আলোচনা। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মিনার মনসুর এবং কাবেদুল ইসলাম। আলোচনায় অংশ নেন শোয়াইব জিবরান, শাহাদাৎ হোসেন নিপু, রুবেল আনছার এবং ওবায়েদ আকাশ। সভাপতিত্ব করেন এ এইচ এম লোকমান।

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন বদরুল হায়দার, টোকন ঠাকুর, খাতুনে জান্নাত, আহসান মালেক এবং কাজী আনিসুল হক। আবৃত্তি করেন শিরিন জাহান, মীর মাসরুর জামান রনি এবং অনিমেষ কর।

এ ছাড়া ছিল শরণ বড়ুয়ার পরিচালনায় গীতিআলেখ্য ‘প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র’, কবিরুল ইসলাম রতনের পরিচালনায় নৃত্য সংগঠন ‘নৃত্যালোক’ এবং ইকবাল হাফিজের পরিচালনায় শিশু-কিশোর সংগঠন ‘দনিয়া সবুজ কুঁড়ি কচি কাঁচার মেলা’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন ফারহানা ফেরদৌসী তানিয়া, রাজিয়া সুলতানা, মো. মেজবাহ রানা, আবুল কালাম আজাদ, নাফিসা ইসলাম ফাইজা, সুমন চন্দ্র দাস, সুজন হাওলাদার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর