সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

২২ কোটি টাকার ইনজেকশনে আটকা আয়াতের জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

২২ কোটি টাকার ইনজেকশনে আটকা আয়াতের জীবন

বিরল রোগ ‘স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাটরোফি’তে আক্রান্ত আয়াত

আয়াত হক। বয়স মাত্র আট মাস। এই বয়সেই তার শরীরে ধরা পড়েছে বিরল রোগ ‘স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাটরোফি’ বা ‘এসএমএ’। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ রোগের কোনো চিকিৎসা বা ওষুধ দেশে নেই। জিনগত এ জটিল রোগ শনাক্তের পর সর্বোচ্চ দুই বছর সময় বেঁধে দেন চিকিৎসকরা। এর মধ্যে চিকিৎসা না হলে আক্রান্ত শিশু ঢলে পড়বে মৃত্যুর কোলে। আয়াত সিলেট মহানগরের মজরটিলার বাসিন্দা জুনেদ হক ও ফারজানা আক্তারের সন্তান। ‘এসএমএ’ অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় তারা গত শনিবার সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে খোদ প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে আয়াতের মা-বাবা জানান, জন্মের পরই তারা লক্ষ্য করেন আয়াতের হাত-পা অস্বাভাবিক নরম এবং সেগুলো নাড়াতে পারছে না। সোজা করতে পারছে না ঘাড়। শ্বাস নিতেও কষ্ট হয় আয়াতের। বিষয়টি দেখে তারা সিলেটের কয়েকজন শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে মেয়েকে নিয়ে যান। পরে তাদের পরামর্শে ঢাকার চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হন। ঢাকার চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে জানান, আয়াত ‘এসএমএ’ নামক বিরল রোগে আক্রান্ত। পরে আয়াতের শরীরের রক্ত সংগ্রহ করে ভারতে পরীক্ষা করিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হন। চিকিৎসকরা জানান, আয়াত ‘এসএমএ’-এর মারাত্মক ধরন টাইপ ওয়ানে আছে। ১ থেকে ২ বছরের মধ্যে চিকিৎসা না করালে তাকে আর বাঁচানো সম্ভব নয়। চিকিৎসকরা জানান, পেশির সঞ্চালনকে নিয়ন্ত্রণ করা মোটর নিউরোন নষ্ট হওয়াই এই বিরল রোগের কারণ। আর এ রোগের কোনো ওষুধ দেশে নেই। আয়াতের মা-বাবা বলেন-চিকিৎসক তাদের জানিয়েছেন, ২২ কোটি টাকার মূল্যের ‘জিন থেরাপি’র একটি ইনজেকশনই ‘এসএমএ’ রোগের একমাত্র চিকিৎসা। কিন্তু সেটি ক্রয়ের সামর্থ্য আয়াতের মা-বাবার নেই। তাই তাদের চোখের সামনে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়ায় তারা যেন দুমড়ে-মুচড়ে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় সরকারিভাবে আয়াতের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সুদৃষ্টি এবং সহযোগিতা কামনা করেছেন আয়াতের বাবা জুনেদ হক ও মা ফারজানা আক্তার।

সর্বশেষ খবর