মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্প

সময়মতো চালু হচ্ছে না স্বয়ংক্রিয় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম

♦ মেয়াদ বাড়ছে আরও তিন বছর ♦ মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮৫ কোটি টাকা

শাহেদ আলী ইরশাদ

আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য স্বয়ংক্রিয় করতে ও শুল্ক ফাঁকি রোধে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নেওয়া ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরম ‘ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’ প্রকল্পের কার্যক্রম সময়মতো শুরু হচ্ছে না। বাণিজ্য সহজীকরণের এই কার্যক্রম চলতি বছরের ডিসেম্বরে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও পুরোপুরি চালু করতে কম করে হলেও আরও তিন বছর লাগবে। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, দেশের একজন ব্যবসায়ীকে বর্তমানে পণ্য আমদানি করতে কমপক্ষে চারটি সংস্থায় যেতে হয়। আর এসব সংস্থার একটি নয় একাধিক টেবিলে যায় নথি। সবমিলিয়ে প্রায় ৩০টি ধাপ পেরিয়ে পণ্য খালাস করতে হয়। একইভাবে এসব ধাপ অতিক্রম করতে হয় রপ্তানির ক্ষেত্রেও। এই দীর্ঘসূত্রতার ইতি টানতে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত সব সংস্থার কার্যক্রমকে একটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরমে আনার কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বাস্তবায়িত ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো নামের এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা চলতি বছরের ডিসেম্বরে। যদিও এখন তিন বছর মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৬ সাল পর্যন্ত করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, ২০২৪ সালের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার থাকলেও আজকে ২০২৩ সাল। ২০২৪ সালের মধ্যে ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্প শেষ হবে না। প্রকল্পের মূল কাজ শুরু হতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। এ জন্য আমরা মেয়াদ বাড়ানোর জন্য প্রস্তাব দিয়েছি। প্রকল্পের সফটওয়্যার ডিজাইন করার জন্য পরামর্শক নিয়োগ করতে যাচ্ছি আমরা। জানা গেছে, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্পের মাধ্যমে শুল্ক কর্তৃপক্ষ আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাই করতে পারবে। সেই লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি ৩৯টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তিও সই করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক দেবে ৫২৯ কোটি টাকা। বাকি অর্থ সরকার ব্যয় করবে। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আরও বলেন, অনেক সংস্থা ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্পের সহায়তা পাবে। বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে শুধু সফটওয়্যার না হার্ডওয়্যার সাপোর্টও আমাদের তরফ থেকে দেওয়া হবে। এটি একটি অনেক বড় কর্মযজ্ঞ। দক্ষ জনবল তৈরি করার জন্য প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বলছে, এই প্রকল্প পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে পণ্য রপ্তানির সময় ৮৮ ঘণ্টায় নেমে আসবে। কমবে আমদানির সময়ও। সবমিলিয়ে বৈদেশিক বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ৩ লাখ ১৯ হাজার ব্যবসায়ী ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো থেকে উপকৃত হবেন। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) পণ্য রপ্তানির হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) ২ হাজার ৭৩১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এটা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি। একই সময়ে প্রায় ৪ হাজার কোটি ডলারের আমদানি হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর