মঙ্গলবার, ৭ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
নারী দিবস কাল

১৬০ দেশ ভ্রমণের রেকর্ড গড়লেন নাজমুন নাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬০ দেশ ভ্রমণের রেকর্ড গড়লেন নাজমুন নাহার

বাংলাদেশি মেয়ে নাজমুন নাহার ১৬০ দেশ ভ্রমণের রেকর্ড গড়েছেন

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ১৬০ দেশ ভ্রমণের রেকর্ড গড়েছেন নাজমুন নাহার। বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা হাতে তিনি পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশ একাকী সড়কপথে ভ্রমণ করেছেন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ ১৬০তম দেশ হিসেবে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পুণ্যভূমি সৌদি আরবের মাটিতে পা রাখেন তিনি।

এরই মধ্যে তিনি সৌদি আরবের শহর রিয়াদ, জেদ্দা ও মক্কা সফর করেন এবং ওমরাহ পালন করেন। তারপর নিজ দেশের মাটিতে ফিরে আসেন। তিনি বিশ্ব শান্তির বার্তা ও পরিবেশ সচেতনতায় তরুণ ও শিশুদের উৎসাহিত করেন।

দেশে ফিরেই গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রোটার‌্যাক্ট দক্ষিণ এশিয়া সম্মেলনে নাজমুন নাহার দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৪৫০ জন প্রতিনিধির সামনে তার বিশ্ব ভ্রমণের সাহসিকতার গল্প তুলে ধরেন। নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য, বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকাকে বহন করার জন্য এবং বিশ্বব্যাপী তরুণদের উৎসাহিত করার জন্য এ সম্মেলনে সব প্রতিনিধির সামনে রোটেশিয়ার পক্ষ থেকে নাজমুন নাহারকে বিশেষ সম্মাননা ‘রোটেশিয়া লিজেন্ডস অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়। বন-জঙ্গল, পর্বতমালা, মহাসমুদ্র, মরুভূমির লাখ লাখ মাইল একাকী পাড়ি দিয়ে আসা তার বিশ্ব ভ্রমণের এ অভিযাত্রাকে অভিনন্দিত করেন এশিয়া থেকে আসা সব প্রতিনিধি। ২৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশন আয়োজিত ‘মিট দ্য সেলিব্রেটি’ সেশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে সারা দেশ থেকে আগত তরুণ ডিবেটারদের উৎসাহিত করেন নাজমুন নাহার। ৩ মার্চ নাজমুন নাহার বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্টের আমন্ত্রিত স্পিকার হিসেবে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত সপ্তম ডিভিশনাল রেড ক্রিসেন্ট ক্যাম্পে সারা বাংলাদেশ থেকে আগত সব ইয়ুথ ভলান্টিয়ারদের বিশ্ব ভ্রমণের সংগ্রাম, সাফল্য এবং অর্জনের কথা তুলে ধরার মাধ্যমে সব তরুণের আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করেন। প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নাজমুন নাহারের প্রথম বিশ্ব ভ্রমণ অভিযাত্রা শুরু হয়। ২০১৮ সালের ১ জুন ১০০তম দেশ ভ্রমণের রেকর্ড সৃষ্টি করেন জিম্বাবুয়েতে। তারপর ৬ অক্টোবর ২০২১ বাংলাদেশের পতাকা হাতে বিশ্বের প্রথম মুসলিম নারী হিসেবে বিশ্ব ভ্রমণের এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক সৃষ্টি করেন আফ্রিকার দেশ সাওটোমে ও প্রিন্সিপ ভ্রমণের মাধ্যমে। যেখানেই গেছেন বাংলাদেশের পতাকার পাশাপাশি তিনি উঁচু করে ধরেছেন বিশ্ব শান্তির বার্তা ‘নো ওয়ার, অনলি পিস’। নাজমুন নাহার তার ভ্রমণের সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লোকাল কমিউনিটি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিজিট করেন। সেখানেই তিনি বিশ্ব শান্তি ও পরিবেশ সচেতনতায় নারী, শিশু ও তরুণদের উৎসাহিত করেন। নাজমুন নাহারের বিশ্ব ভ্রমণ এতটা সহজ ছিল না। বিশ্ব ভ্রমণ করার জন্য তাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। দীর্ঘ ২২ বছরের অভিযাত্রায় নাজমুন অনেক কঠিন-দুর্গম পথ পাড়ি দিয়েছেন। অনেক কঠিন পরিস্থিতিসহ মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন বহুবার। তবুও থামেনি তার পদযাত্রা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, রাষ্ট্রপ্রধান, বিখ্যাত ব্যক্তিরা তাকে সংবর্ধিত করেছেন। পিস টর্চ বিয়ারার অ্যাওয়ার্ডসহ দেশ-বিদেশে ৫৫টিরও বেশি সম্মাননা অর্জন করেছেন তিনি। নাজমুন নাহার সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটি থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। তার জন্মস্থান বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর সদরে। নাজমুন নাহারের লক্ষ্য বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে তিনি বিশ্বের প্রতিটি দেশে ভ্রমণ করবেন।

সর্বশেষ খবর