শুক্রবার, ১০ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

পরিযায়ী চুনিকণ্ঠী

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

পরিযায়ী চুনিকণ্ঠী

শীতের পাখি চুনিকণ্ঠী। এরা শীতকালে সাইবেরিয়া থেকে পরিযায়ী হয়ে আমাদের দেশে আসে। আবার শীতের শেষে প্রজননের সময় নিজ দেশে চলে যায়। তবে শীত শেষে চলে গেলেও এই পরিযায়ী চুনিকণ্ঠী পাখিটিকে মাহদী কবীর তার ‘মীম ও শীতের পাখি চুনিকণ্ঠী’ শিশুতোষ গল্প বইয়ে মলাটবন্দি করে রেখেছেন। এই পাখির গল্প দিয়েই তিনি শিশুদের মনে পাখি প্রেম গড়ে তুলতে চেয়েছেন। সাইবেরীয় চুনিকণ্ঠী এশিয়ার খুবই পরিচিত একটি ছোট পাখি। ইংরেজি নাম Siberian rubythroat. এরা চড়ই আকৃতির লাজুক পাখি। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মিয়ানমার ও আশপাশের দেশগুলোতেও এদের দেখা যায়। তবে আমাদের দেশে সাইবেরীয় চুনিকণ্ঠী একটি বিরল পরিযায়ী পাখি। অঞ্চল ভেদে লাল গলা বা গুম্পিগোরা নামেও পরিচিত। এদের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫-১৭ সেন্টিমিটার। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চেহারা ভিন্ন। পুরুষ পাখির গলার মাঝখান উজ্জ্বল লাল রঙের।

 যা পাখিটির সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ওপর-নিচে স্পষ্ট চওড়া সাদা টান। মূলত গলা চুন্নি পাথরের মতো লাল টকটকে হওয়ায় এই পাখিটির বাংলা নাম হয়েছে চুনিকণ্ঠী। আর স্ত্রী পাখির গলা অস্পষ্ট সাদাটে ও বেগুনি রেখা। উভয়ের মাথা, পিঠ ও লেজ জলপাই-বাদামি। লেজ ঊর্ধ্বমুখী। লেজতল সাদাটে। বুক ধূসর। পেট জলপাই-বাদামির ওপর অস্পষ্ট সাদাটে। ঠোঁট কালো, গোড়ার দিকে ফ্যাকাসে। চোখ কালো। পুরুষ পাখির ভ্রু-রেখা স্পষ্ট সাদা। গলা চুনি লাল। আর স্ত্রী পাখির গলা সাদা কিংবা বেগুনি। এরা পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ খেয়ে বেঁচে থাকে। প্রজনন মৌসুম মে থেকে আগস্ট মাস। এ সময় সাইবেরিয়ার তাইগ্যা অঞ্চলে বাসা বাঁধে। ডিম পাড়ে চার থেকে ছয়টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ১৪ দিন। ডিম ফোটার দুই সপ্তাহ পরে বাচ্চারা বাসা থেকে উড়াল দেয়। এরা কৃষিভূমি, তৃণভূমি এবং গুল্মলতার ঝোপে বিচরণ করে। কখনো একাকী কখনো জোড়ায় বিচরণ করে। গলার সুর খুব সুন্দর। সুন্দর গলায় দারুণ গান গাইতে পারে। তাই এদের গায়ক পাখিও বলা হয়। সম্প্রতি কমলগঞ্জের নয়াগাঁত্ত গ্রামের শৌখিন ফটোগ্রাফার খোকন থৌনাউজমের সূর্যমুখী বাগানে এই পাখিটি দেখা যায়। খোকন থৌনাউজম বলেন, ‘কোনো বাণিজ্যিক চিন্তাভাবনা নয়, শুধু পাখিদের জন্যই এই সূর্যমুখী বাগান করেছি। পরিযায়ী পাখি ছাড়াও বিশেষ করে টিয়া পাখির খাবারের জন্য এই উদ্যোগ নেই।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর