রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

কুমার নদ যেন ময়লার ভাগাড়

দখলের কারণে প্রস্থ কমেছে। নাব্য আগের মতো নেই। দূষণের কারণে পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে

ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

কুমার নদ যেন ময়লার ভাগাড়

কুমার নদ ফরিদপুর অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী নদ। ফরিদপুর সদর উপজেলার পদ্মা নদী থেকে শুরু করে ফরিদপুর সদর, সালথা, নগরকান্দা, ভাঙ্গা, গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলা হয়ে মাদারীপুর জেলায় আড়িয়াল খাঁ নদীর সঙ্গে মিশেছে। একসময় এ অঞ্চলের কৃষি, যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকটা কুমার নদনির্ভর ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এ নদ তার অতীত ঐতিহ্য হারিয়েছে। দখলের কারণে প্রস্থ কমেছে। নাব্য আগের মতো নেই। দূষণের কারণে পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি দূষণের শিকার হয়েছে ভাঙ্গা উপজেলা শহর এলাকায়। উপজেলা শহর এলাকায় প্রায় ৩ কিলোমিটার নদের অনেক জায়গা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিন নদের পাড় ঘুরে দেখা যায়, ভাঙ্গা এলাকায় প্রায় ৫০ জায়গায় সরাসরি ময়লা-আবর্জনা নদ ও নদের তীরে ফেলা হয়। ভাঙ্গা বাজারের অধিকাংশ ময়লা-আবর্জনা, পলিথিন, পানির বোতল বছরের পর বছর নদের পাড়ে ও নদের পানিতে ফেলা হচ্ছে। পুরো নদ এলাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। অনেক বাসাবাড়ির টয়লেটের মলমূত্রের লাইনও নদের ভিতরে। নদের পাড় দিয়ে দুর্গন্ধে হাঁটা কষ্টকর। বাজারের মাছ-মাংসের আবর্জনাও নদের পাড়ে ফেলা হচ্ছে। ভাঙ্গা সরকারি কাজী মাহবুব উল্লাহ কলেজের ছাত্র জমির হোসেন বলেন, যেভাবে কুমার নদে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে, তাতে এ নদের মাছ খাওয়াও অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ। ভাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। কুমার নদের পাড় দিয়ে এখন দুর্গন্ধে হাঁটা যায় না। উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর ভাঙ্গা শাখার সহসাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান বলেন, যে হারে ময়লা-আবর্জনার সঙ্গে পলিথিন ফেলা হচ্ছে, তাতে পরিবেশ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভাঙ্গা পৌর এলাকার ছিলাধরচর মহল্লার বাসিন্দা নুরুল হক বলেন, আমরা ছোটবেলা থেকেই কুমার নদে গোসল করে থাকি। অসংখ্য লোক এখনো কুমার নদে গোসল করে। কিন্তু ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে পানিতে প্রায় সারা বছর দুর্গন্ধ থাকে। ভাঙ্গা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সহিদুল হক মিরু মুন্সী বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সময় সতর্ক করেছি কুমার নদ ও নদের পাড়ে যেন তারা ময়লা না ফেলে। তারপরও অনেকে ফেলছে। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের আরও বেশি সতর্ক ও সচেতন করতে হবে। ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিম উদ্দিন বলেন, এ এলাকার কিছু মানুষের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে নদীতে ময়লা ফেলা। ভাঙ্গা বাজারের ব্যবসায়ীদের অনেকেই নদের পাড়ে ময়লা ফেলে। এতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে বণিক সমিতিকে বলে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হবে। নদের পাড় ময়লা-আবর্জনামুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর