শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

চনপাড়া বস্তি ফের উত্তপ্তের নেপথ্য কারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

চনপাড়া বস্তি ফের উত্তপ্তের নেপথ্য কারণ

রূপগঞ্জের চনপাড়া বস্তির ডন বজলু মেম্বার ৩১ মার্চ মারা যাওয়ার পর থেকে সেখানে এখন চলছে আধিপত্যের লড়াই। বস্তির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কবজায় রাখতে গত দুই সপ্তাহে সেখানে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত চারজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বস্তির আধিপত্য ধরে রাখা, আসন্ন ইউপি সদস্য পদে উপনির্বাচন আর প্রভাবশালীদের ইন্ধন এসব সংঘর্ষের মূল কারণ বলে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত বছর ২৭ সেপ্টেম্বর র?্যাবের অস্ত্র ও মাদকবিরোধী অভিযানের সময় র?্যাব সদস্যদের ওপর হামলা করে সেখানকার সন্ত্রাসীরা। এ হামলায় সরাসরি অংশ নেন বজলু মেম্বার, তার সহযোগী রাজা, সিটি শাহিনসহ আরও কয়েকজন। তারা সবাই রূপগঞ্জের এমপি গোলাম দস্তগীর গাজীর নিজস্ব লোক হিসেবে পরিচিত। এ হামলার ঘটনায় তাৎক্ষণিক সন্ত্রাসী রাজাকে গ্রেফতার করা হয়। আর ১০ নভেম্বর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান সিটি শাহিন। ঘটনার ১২ দিন পর বজলুকেও আটক করে র?্যাব-১। এর পেরিপ্রেক্ষিতে বজলুর প্রতিপক্ষ ডাকাত সমসের ও সাহাবুদ্দিন এলাকায় প্রবেশ করেন গাজী গোলাম দস্তগীরের নির্দেশে। সমসের, সাহাবুদ্দিন আর মহিলা লীগ নেত্রী রিতার নেতৃত্বে নতুন গ্যাংয়ের উত্থান ঘটে চনপাড়ায়। তাদের নেতৃত্বে চলে চনপাড়ার সব ধরনের অপরাধ কর্মকা-। এদিকে ৩১ মার্চ কারা হেফাজতে থাকা বজলু মেম্বার মারা গেলে তার মেম্বার পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় নতুন গ্যাং তৈরি করেন আরেক মাদক সম্রাজ্ঞী ইয়াছমীন ও বজলুর ডান হাত হিসেবে পরিচিত জয়নাল। চনপাড়ায় নিজের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে দুই গ্যাংয়েরই পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছেন পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। গাজীর আশ্রয়-প্রশ্রয়ে উভয় গ্যাং এখন বেপরোয়া। যখন তখন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে শুরু হয় সংঘর্ষ। সর্বশেষ বস্তির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাতে জয়নাল গ্রুপের সঙ্গে সমসের গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২৫ জন গুরুতর জখম হয়। চনপাড়ায় এখন আবার নতুন করে শুরু হয়েছে ত্রাসের রাজত্ব। পাশাপাশি মাদক ব্যবসা, খয়ের পার্টি, মলম পার্টি, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, অস্ত্র ব্যবসাসহ সব ধরনের অপরাধ কর্মকা- চলছে আগের চেয়ে আরও অনেক বেশি। এসব অপরাধ কর্মকান্ডে সেখানকার নিরীহ বাসিন্দারা শঙ্কিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, রাজনৈতিক শেল্টার বন্ধ না হলে এই গ্যাং প্রতিরোধের ক্ষমতা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও নেই।

সর্বশেষ খবর