গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ দান করা হবে না। আজ সাভার গণবিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে চিরশায়িত হবেন তিনি। সেখানেই তাঁর লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পরিবার ও গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে। গতকাল জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নামাজে জানাজার আগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ তথ্য জানান তাঁর ছেলে বারিশ চৌধুরী। তার আগে সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাজনীতিক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত করেন। পরে তারা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নামাজে জানাজায়ও অংশ নেন। সেখানে তাঁকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এ জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে একটি অস্থায়ী মঞ্চ বানানো হয়। সেখানে রাখা হয় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ। এ সময় পাশে ছিলেন স্ত্রী শিরীন হকসহ পরিবারের সদস্যরা। গতকাল বেলা আড়াইটায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর তৃতীয় নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে তাঁর প্রথম এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জানাজায় অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, সিনিয়র আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলামসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। জানাজার আগে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ছেলে বারিশ চৌধুরী বলেন, আমার বাবার সারা জীবনের ইচ্ছা ছিল তাঁর দেহ চিকিৎসাবিজ্ঞানের জন্য দান করা হোক। সন্তান হিসেবে, পরিবারের সদস্য হিসেবে আমরা এই আশাটি পূরণ করতে চেষ্টা করেছিলাম। এ জন্য আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজে দেহ দান করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দুই প্রতিষ্ঠান থেকেই শুনেছি, কেউ নেই যে আমার বাবার লাশে ছুরি লাগাতে পারবেন। সম্মান থেকেই এটি বলা হয়েছে।

শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন : রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অসংখ্য মানুষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সেখানে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ রাখা হয়। সেখানে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে গার্ড অব অনার দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) হেদায়েতুল ইসলাম। আজ সকাল ১০টায় শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়া হবে। জুমার নামাজ শেষে সেখানে তাঁর আরেকটি জানাজা হবে। এরপর সেখানেই তাঁর দাফন সম্পন্ন হবে। গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে মারা যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তিনি দীর্ঘদিন কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। বার্ধক্যজনিত সমস্যাও দেখা দিয়েছিল তাঁর।