শুক্রবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা
কৃষি

প্রকৃতিতে দোল খাচ্ছে সম্ভাবনাময় সবজি শজিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

প্রকৃতিতে এখন চলছে বসন্ত ঋতুকে বিদায় জানিয়ে গ্রীষ্মকে বরণের প্রস্তুতি। এই সময়ের অন্যতম সুস্বাদু সবজি হচ্ছে শজিনা। এটি এখন রংপুরের অনেক স্থানের গাছে গাছে দোল খাচ্ছে। রংপুর অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে এটি চাষ হলে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে কৃষিবিদরা মনে করছেন। রংপুর নগরীর সাতমাথা, মিঠাপুকুরের পায়রাবন্দ, রানীপুকুর এলাকায় অনেকে শজিনা চাষকে বাণিজ্যিকভাবে গ্রহণ করলেও এটি এখন পর্যন্ত বাণিজ্যিক সবজি হিসেবে জনপ্রিয়তা পায়নি চাষিদের কাছে। কারণ এটি জমিতে বপন করলে এক বছর ওই জমিতে অন্য ফসল আবাদ করা যায় না। তাই বসতবাড়ি ও রাস্তার পাশেই এর ফলন ভালো হয়। পুষ্টিগুণ সম্বৃদ্ধ এই শজিনা বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব বলে অনেকেই মনে করছেন। পায়রাবন্দের আদর্শ চাষি রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি বাণিজ্যিকভাবে শজিনার চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। তার দেখাদেখি অনেকেই শজিনা চাষ করেছেন। প্রতি কেজি শজিনা এখন মৌসুমের শুরুতে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। এ ছাড়া স্বাভাবিক সময়ে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়েক বছর আগে কৃষি অফিসের উদ্যোগে মিঠাপুকুর, বলদিপুকুর ও রানীপুকুর এলাকায় রাস্তার পাশে শজিনা গাছ লাগানো হয়েছে। তবে অযত্ন-অবহেলায় এখন অনেক গাছ মরে গেছে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বারো মাসি শজিনার জাতে প্রায় সারা বছরই ফলন পাওয়া যায়। তবে চৈত্র মাসে প্রতিটি গাছেই শজিনা পাওয়া যায়। আমাদের দেশে ২-৩ প্রকার শজিনা পাওয়া যায়। বসতবাড়ির আঙ্গিনা ও রাস্তার পাশের শজিনা গাছ এখন বাহারি শোভাবর্ধনের পাশাপাশি গৃহস্থদের বাড়তি অর্থ এনে দিচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর রংপুরের বুড়িহাট হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু সায়েম বলেন, শজিনার পাতা পুষ্টিগুণে ভরা। নিরামিষভোজীরা শজিনার পাতা থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হতে পারেন। পরিমাণের ভিত্তিতে তুলনা করলে একই ওজনের শজিনা পাতায় কমলালেবুর ৭ গুণ বেশি ভিটামিন-সি, দুধের ৪ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। ভারতীয় আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রমতে, শজিনা গাছ ৩০০ রকমের রোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করে। তিনি আরও বলেন, শজিনা রংপুর অঞ্চলে একটি সম্ভাবনাময় সবজি। বনায়নের সময় অন্যান্য গাছের চারা রোপণের সময় শজিনা চারা রোপণ করলে এক থেকে দেড় বছরের মাথায় এর ফলন পাওয়া যাবে। শজিনার বাকল, শিকড়, ফুল, ফল, পাতা, বীজ এমনকি এর আঠাতেও ঔষধি গুণ রয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর