বুধবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রচন্ড গরমে সতর্কতা জরুরি যেসব বিষয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রীষ্মের কাঠফাটা রোদে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। আবহাওয়ার পারদ প্রায় প্রতিদিনই রেকর্ড ভাঙছে। তীব্র থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে দেশের ওপর দিয়ে। গরমে বিপর্যস্ত মানুষ। দেশের কোথাও কোথাও ইতোমধ্যে তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রিতে পৌঁছে গেছে। তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, কোনো এলাকায় যদি তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে তাহলে তাকে বলে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রচন্ড এই গরমের সময় মানুষের বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কেননা, সার্বিকভাবে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির ওপরে উঠলে শরীর নিজেকে ঠান্ডা করার যে প্রক্রিয়া সেটি বন্ধ করে দেয়। যে কারণে এর বেশি তাপমাত্রা হলে তা যে কোনো স্বাস্থ্যবান লোকের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তাই তীব্র এই গরমে কিছু বিষয়ে সতর্কতা জরুরি। এই গরমে বিপদ এড়াতে কী করা যাবে, কী করা যাবেন না সে বিষয়ে ভাবতে হবে। যেহেতু তাপমাত্রা ইতোমধ্যে ৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে, সুতরাং তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে এমন চিন্তা মাথায় রেখে আগে থেকেই নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে এবং সব সময় ঘরে বিদ্যমান তাপমাত্রায় থাকা পানি ধীরে ধীরে পান করতে হবে। ঠান্ডা ও বরফজাতীয় পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কেননা, তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে খুব বেশি ঠান্ডা পানি পান করলে মানবদেহের ছোট রক্তনালিগুলো ফেটে যেতে পারে। বাইরে যখন তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রিতে পৌঁছে যায়, তখন বাইরে থেকে ঘরে ফিরে কখনোই ঠান্ডা পানি পান করা যাবে না। সব সময় ধীরে ধীরে উষ্ণ পানি পান করতে হবে। যদি বাইরে থাকার সময় হাত-পা রোদের সংস্পর্শে থাকে, তাহলে বাসায় ফিরেই তড়িঘড়ি হাত-পা ধোবেন না। এক্ষেত্রে গোসল বা হাত-পা ধোয়ার আগে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। তীব্র গরমের এই সময়ে যতটা সম্ভব বাইরে বের না হওয়াই ভালো। বিশেষ করে বেলা ১১টার পর থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত রোদের তীব্রতা অনেক বেশি থাকে। এই সময়ে ঘরে থাকাই ভালো। জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হতে হলে ছাতা, টুপি সঙ্গে রাখতে হবে। পা ঢাকা জুতা ও হাল্কা, ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরুন। স্কিন টাইট বা সিন্থেটিক কিছু পরবেন না।

তৃষ্ণার্ত বোধ না করলেও নির্দিষ্ট সময় অন্তর পানি পান করতে হবে। সব সময় পানীয় সঙ্গে রাখতে হবে। শরীরে অস্বস্তি হলে ওআরএস স্যালাইন পান করতে পারেন। বাড়িতে শরবত, ফলের রস, লাচ্চি বানিয়েও পান করতে পারেন। এভাবে শরীরকে সবসময় হাইড্রেটেড রাখতে হবে। বাইরে বের হলে বেশিক্ষণ রোদে থাকবেন না। যাদের পেশার জন্য রাস্তায় রোদে থাকতেই হবে, তারা কিছু সময় অন্তর ছায়া বা ঠান্ডায় থাকার চেষ্টা করতে হবে। যারা বেশি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকেন, যাদের কনকনে ঠান্ডা পানি পানের প্রবণতা থাকে এবং গরম থেকে বেরিয়েই দীর্ঘ সময় এসি ঘরে কাটান তাদের অসুখ চট করে ধরে নেওয়ার শঙ্কা বেশি। প্রচন্ড গরম থেকে এসে এসি ঘরে ঢোকার আগে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। আবার এসি থেকে বেরিয়েও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। শরীরকে স্বাভাবিক তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সময় দিতে হবে। হিট স্ট্রোক ও হিট ক্র্যাম্প এড়াতে শরীর ঠান্ডা রাখতে হবে। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তাকে ছায়ায় বা অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে যান। চোখেমুখে পানির ঝাপটা দিন। পারলে ঠান্ডা পানিতে গা স্পঞ্জ করিয়ে দিন। পুরনো বা বাসি খাবার এড়িয়ে চলুন। প্রতিদিন অবশ্যই গোসল করুন।

সর্বশেষ খবর