বুধবার, ৩ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

অপহৃতের আর্তচিৎকার শুনিয়ে মুক্তিপণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

জমি বিক্রির কথা বলে ডেকে নিয়ে অপহরণ করা হয় ওষুধ বিক্রেতা আলমগীর হোসেনকে। অপহৃতের আর্তচিৎকার শুনিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে চাওয়া হয় ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ। তবে এ যাত্রায় সফল হতে পারেনি অপহরণকারী চক্র। ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে র‌্যাব-১০-এর একটি দল আলমগীরকে যাত্রাবাড়ীর ছনটেক এলাকা থেকে উদ্ধারসহ চক্রের আটজন সদস্যকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন সিয়াম আল জেরিন তালুকদার, রাসেল শেখ ওরফে মিঠু, শহিদুল ইসলাম, প্রণব নারায়ণ ভৌমিক, আলমগীর, আ. রব খান, সৈয়দা জান্নাত আরা ঊর্মি ও ইসরাত জাহান সায়লা। র‌্যাব বলছে, তাদের কাছ থেকে একটি খেলনা পিস্তল, তিনটি চাকু, একটি হাতুড়ি, একটি আয়রন মেশিন, একটি লাঠি, একটি বেলনা, একটি বেল্ট, একটি হুঁকা ও ১৩টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সংস্থাটির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে র‌্যাব-১০ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন বলেন, বিষয়টি অবগত হয়ে সোমবার র‌্যাব-১০-এর একটি টিম অভিযান চালায় যাত্রাবাড়ী থানাধীন বউবাজার ছনটেক এলাকায়। এ সময় অপহৃত আলমগীরকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

ভুয়া পুলিশের মামলায় এর আগেও গ্রেফতার হয়েছিলেন শহিদুল ইসলাম। ফরিদ উদ্দীন জানান, ২৯ এপ্রিল বিকাল ৪টার দিকে জমি কেনার জন্য কালিয়াকৈর থানাধীন চান্দুরা চৌরাস্তার দিকে যান ভুক্তভোগী আলমগীর। রাত ১১টার দিকে আলমগীর বাড়িতে ফিরে না আসায় তার পরিবারের লোকজন ফোন করলে সেটি বন্ধ পান। কোথাও তার কোনো সন্ধান না পেয়ে কালিয়াকৈর থানায় একটি জিডি করেন তারা। এর পরদিন বেলা ১১টায় আলমগীরের স্ত্রীর মোবাইল ফোনে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ফোন দিয়ে জানান, তারা আলমগীরকে অপহরণ করেছেন। এ সময় আলমগীরের ওপর নির্যাতনের বিভিন্ন চিৎকার শুনিয়ে তার পরিবারের কাছে মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন তারা। টাকা না পেলে তারা আলমগীরকে প্রাণে মেরে ফেলবেন বলে হুমকিও দেওয়া হয়। পরে বিষয়টি র‌্যাবকে জানায় আলমগীরের পরিবার। র‌্যাব-১০ অধিনায়ক বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, অপহরণকারী চক্রটি ভুক্তভোগী আলমগীরের কাছে জমি বিক্রির কথা বলে তাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায়। বিকাল ৪টার দিকে তাদের সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে গিয়ে খেলনা পিস্তল দিয়ে মৃত্যুর ভয় দেখায়। পরে সিএনজিযোগে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন ছনটেক বউবাজার এলাকায় তাদের আস্তানায় নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে আলমগীরকে সবাই মিলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। মারধরের একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর শরীরের পেছনের অংশে গরম তেল ঢেলে দেয়। এ সময় চিৎকার করলে সেটির আওয়াজ শুনিয়ে তার পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

সর্বশেষ খবর