সোমবার, ৮ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাবাকে কুপিয়ে হত্যার পর পুলিশে ফোন

নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীর রায়পুরায় নেশাগ্রস্ত ছেলের দায়ের কোপে হাজী আইনুল হক (৭০) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ইয়াসিন (২৮)-কে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল সকালে উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের মেজেরকান্দি উত্তরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত ইয়াসিন নিহত হাজী আইনুল হকের মেজ ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ইয়াসিনের স্ত্রী হাওয়া বেগমের সঙ্গে বাবা ও মায়ের বিভিন্ন পারিবারিক বিষয় নিয়ে সমস্যা চলছিল। যে কারণে তার স্ত্রী বেশির ভাগ সময়ই বাপের বাড়িতে থাকতেন। গতকাল সকালে এসব বিষয় নিয়ে বাবার সঙ্গে ইয়াসিনের তর্কাতর্কি হয়। এক পর্যায়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বাবাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে তিনি নিজেই ৯৯৯-এ কল করে বাবাকে হত্যার কথা জানান। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ইয়াসিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, ইয়াসিনের বাবা নেশাগ্রস্ত ছেলেকে প্রচুর প্রশ্রয় দিতেন। তার অনেক কুকর্ম তিনি টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিয়েছিলেন। সর্বশেষ সেই নেশাগ্রস্ত ছেলেই তাকে কুপিয়ে হত্যা করল। নিহত আইনুলের পূত্রবধূ হাওয়া বেগম বলেন, ‘আমাদের বিয়ে হয়েছে চার বছর। আমার শ্বশুর ও সৎ শাশুড়ির অত্যাচারের কারণে আমি বেশির ভাগ সময় বাপের বাড়িতে কাটিয়েছি। নানা বিষয় নিয়ে প্রায়ই শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে ঝগড়া হতো। পরে আজ (রবিবার) আমার স্বামী দা দিয়ে কুপিয়ে শ্বশুরকে হত্যা করেন।’ ইয়াসিন মাদকাসক্ত কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বিয়ের পর দেখতাম তিনি মাদক সেবন করতেন। কিন্তু গত ১১ মাস তিনি কোনো রকম মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত নন।’ নিহতের বন্ধু হাজী কল্যাণ সংগঠনের মির্জানগর ইউনিয়নের সভাপতি হাজী আলম ভূইয়া বলেন, ‘আইনুল হাজী কল্যাণের মির্জানগর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আমরা ২০১৪ সালে একসঙ্গে হজ পালন করেছি। তারপর থেকে তার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক। তিনি প্রায়ই এ নেশাগ্রস্ত ছেলেকে নিয়ে কথা বলতেন। তিনি তাকে খুব ভয়ও পেতেন। তার জন্য নরসিংদীতে একটি বাড়িও বিক্রি করতে হয়েছে বলে বলেছিলেন তিনি। আজ (গতকাল) সকালে শুনতে পেলাম ইয়াসিন তার বাবা আইনুলকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এমন পাষ- ছেলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’ রায়পুরা থানার উপ-পরিদর্শক নবী হোসেন বলেন, দা দিয়ে কুপিয়ে বাবাকে হত্যার পর ঘাতক ছেলে ইয়াসিন নিজেই ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি জানান। পরে আমরা তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাই। হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইয়াসিনের স্ত্রী ও শাশুড়িকে থানায় নেওয়া হয়েছে। সুরতহাল প্রস্তুতকালে নিহতের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের চারটি জখমের চিহ্ন দেখা গেছে। লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর