শিরোনাম
রবিবার, ১৪ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
সিটিতে জমবে লড়াই

বিএনপির ভোট টানার চেষ্টায় সবাই

বরিশাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বিএনপির ভোট টানার চেষ্টায় সবাই

বিএনপিবিহীন বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীর জয়ে বিএনপিকে সমর্থন করেন এমন ভোটারদের ভোট টানার চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগসহ তিন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা। এসব ভোট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন ধারণায় তারা বিএনপি সমর্থকদের ভোট পাওয়ার চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেই নিজ বলয়সহ সাধারণ ভোটারদের কাছে ছুটছেন বিএনপির প্রয়াত সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের ছেলে কামরুল আহসান রূপণ। শেষ পর্যন্ত মেয়র প্রার্থীর জয়ে বিএনপির ভোট ‘ফ্যাক্টর’ হতে পারে বলে স্বীকার করেছেন সরকারবিরোধী দুই প্রধান প্রার্থীসহ নৌকার প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী।

ব্যক্তিগত ও সাংগঠনিক প্রয়োজনে গতকাল ঢাকায় গেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত। তবে তার নির্বাচনী কর্মকাণ্ড থেমে নেই। নৌকার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা গত দুই দিন ওয়ার্ড ও কেন্দ্রভিত্তিক দলীয় অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিরসনে ২৪, ২৫, ২৬, ২৮, ২৯, ৩০ এবং ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সাংগঠনিক তৎপরতা চালিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে সাংগঠনিক শক্তি আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দলীয় বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে দাবি নৌকার প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী আফজালুল করিমের।

বিএনপিবিহীন সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীর জয়ে বিএনপির সমর্থকদের ভোটব্যাংক কোনো ভূমিকা রাখতে পারে কি না বা তাদের সমর্থক গোষ্ঠীর কাছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী যাবেন কি না- জানতে চাইলে আফজালুল করিম বলেন, এটা আওয়ামী লীগের কোনো যুদ্ধ নয়। সিটি সমস্যা সমাধানের যুদ্ধ। নৌকার প্রার্থী নতুন বরিশাল গড়ার অঙ্গীকার করেছেন। বরিশালের উন্নয়নে দলমতনির্বিশেষে সবার কাছে ছুটছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী। সে ক্ষেত্রে বিএনপির সমর্থক গোষ্ঠীও বাদ যাচ্ছে না। বরিশালের উন্নয়নে সব দলমতের মানুষ ১২ জুন নৌকায় রায় দেবে বলে প্রত্যাশা করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আফজালুল করিম।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস গতকাল নগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করলেও তা বানচাল করে দেয় পুলিশ। পরে ওই এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি।

তাপস বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘রিটার্নিং কর্মকর্তা আমাদের কোনো কাজই করতে দেন না। শুরু থেকে তার স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় জাতীয় পার্টির প্রার্থীর বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন তিনি।’

বরিশাল সিটি নির্বাচনে বিএনপির সমর্থকদের ভোট মেয়র প্রার্থীর জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে স্বীকার করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস। তিনি বলেন, ‘বিএনপির প্রার্থী নেই। তাদের সমর্থকরা অন্য দলের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। আমরা অন্য ভোটারদের মতো বিএনপির সমর্থকদের কাছেও যাব, ভোট চাইব। তবে তাদের নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই।’

আচরণবিধির কারণে ঘরোয়া বিভিন্ন কর্মসূচিতে সাংগঠনিক তৎপরতা চালাচ্ছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম।

বিএনপির সমর্থকদের ভোটব্যাংক যে কোনো প্রার্থীর জয়-পরাজয় ত্বরান্বিত করতে পারে স্বীকার করে মুফতি ফয়জুল করিম বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কখন কে কাকে ভোট দেবে বোঝা মুশকিল। তবে বিএনপির সমর্থকরা আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে ভোট দেবে না এটা নিশ্চিত। জাতীয় পার্টি এখনো সরকারের সঙ্গে জোটে আছে। সে হিসেবে বিএনপি বিরোধী দল, ইসলামী আন্দোলনও বিরোধী দল। সরকারবিরোধী প্রার্থী হিসেবে ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী বিএনপির সমর্থকদের ভোট পাওয়ার দাবিদার। আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর পর সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি বিএনপির সমর্থকদের ভোট পেতে তাদের কাছে যাবেন বলে জানান মুফতি ফয়জুল। এদিকে বিএনপির সাবেক প্রয়াত মেয়র আহসান হাবিব কামালের ছেলে কামরুল আহসান রূপণও বিএনপির ভোটারসহ সাধারণ মানুষের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার আশা প্রকাশ করেন। রূপণ বলেন, মানুষ ভোট দিতে পারে না। মানুষের ভোটাধিকার রক্ষায় প্রার্থী হয়েছেন তিনি। জয় পেতে দলমতনির্বিশেষে সবার কাছে যাবেন বলে জানান রূপণ। রিটার্নিং কর্মকর্তার গোপনীয় সহকারী (সিএ) রাজীব চন্দ্র পাল জানান, গতকাল পর্যন্ত মেয়র পদে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলন ও জাকের পার্টির প্রার্থী ছাড়াও স্বতন্ত্র পাঁচজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। অর্থাৎ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন মোট নয়জন। এ ছাড়া ৩০ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৬৭ এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪১ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। ১২ জুন বরিশাল সিটি নির্বাচন। নির্বাচনে অংশ নিতে ১৬ মে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়া যাবে বলে জানান রাজীব পাল।

সর্বশেষ খবর