শনিবার, ২০ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

বাজারে পিঁয়াজের ঝাঁজ

আমদানি করার ঘোষণা বাণিজ্যমন্ত্রীর শুনেই কমতে শুরু করেছে দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাজারে পিঁয়াজের ঝাঁজ

বাজারে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের মূল্য এখন সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। মাছ, মাংস ও সবজির দাম দিন দিন আরও বাড়ছে। বিশেষ করে পিঁয়াজের ঝাঁঝ বাড়ায় ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি দেশি পিঁয়াজ ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। এ হারে দাম বাড়তে থাকলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে অনুমান করতে পারছেন না কেউ। এ ছাড়া বাজারে ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে কাকরল, বরবটি ও কচুরমুখী। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

শনিরআখড়া বাজারে দেখা যায়, লেবুর হালি ২০, লাউ প্রতি পিস ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে কাঁচামরিচ ২০০ ও ধনিয়াতাপাতা ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আলুর দাম বেড়ে ৪০ ও দেশি পিঁয়াজ প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে গত সপ্তাহে ৬০ টাকায় বিক্রি হওয়া শসা বিক্রি হচ্ছে ৫০ ও কাঁচা আম ৪০ টাকা থেকে কমে ৩০ টাকা হয়েছে। শনিরআখড়া বাজারের বিক্রেতা আলামিন শেখ বলেন, বাজারে সব জিনিসের দামই বেশি। আগে পটোল ৬০ টাকায় বিক্রি করতাম, এ সপ্তাহে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। গত সপ্তাহে মূলা বিক্রি করেছি ৫০ টাকায়। এ সপ্তাহে ১০ টাকা বেড়ে মূলা প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি করছি। গত সপ্তাহে গোলবেগুন ৬০ টাকায় বিক্রি করেছি, এ সপ্তাহে ৭০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় চরম বিরক্ত হয়ে ক্রেতা আবদুল হালিম বলেন, এখন বাজারে ৬০-৭০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। সিজন, নন সিজন বলে কোনো কথা নেই, সব কিছুর দামই বাড়তি। আমাদের মতো যারা চাকরি করেন তাদের তো বেতন বাড়েনি। জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে সে তুলনায় আয় বাড়েনি। বর্তমানে যারা মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত তাদেরই সমস্যা বেশি। উচ্চবিত্ত যারা আছেন, তাদের তো কোনো সমস্যা নেই। কারণ তাদের আয় প্রতিনিয়তই বাড়ছে।

বাজারে আলুর দাম আরও বেড়ে এখন প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত দুই দিন আগেও ছিল ৩৫ টাকা। রোজার ঈদের পর থেকেই ধীরে ধীরে আলুর দাম বাড়তে শুরু করে। তখন এ পণ্যটির দাম ছিল প্রতি কেজি ২৫ টাকা। এক মাসেরও কম সময়ের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ১৫ টাকা। আলুর দাম বাড়ার বিষয়টি উঠে এসেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যেও। সংস্থাটি বলছে, বাজারে এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম ২৯ শতাংশ বেড়েছে। আর বছরের ব্যবধানে দাম বেড়েছে প্রায় ৭৪ শতাংশ। গত বছর এ সময়ে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ১৮ থেকে ২৫ টাকা, যা এখন ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁপের দামও বেড়েছে। সারা বছর পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে কেনা গেলেও এখন ৬০ থেকে ৭০ টাকার কমে মিলছে না। উত্তাপ ছড়াচ্ছে মাছের বাজারও। হুট করে সব ধরনের মাছের দাম কেজিপ্রতি ৩০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ৬০০ টাকা কেজির কমে কেনা যাচ্ছে না টেংরা, কই, শিং ও চিংড়ি। চাষের রুই-কাতলা বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি। দুই কেজি বা তার চেয়ে বড় হলে দাম কেজিতে আরও ১০০-২০০ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে। এমনকি ছোট আকারের পাঙাশ-তেলাপিয়া মাছের দামও এখন কেজিপ্রতি ২৪০-২৫০ টাকা। যা স্বাভাবিক সময়ে ২০০ টাকা কেজি বা তারও কমে পাওয়া যেত।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুদি দোকানগুলোয় প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৯০ টাকা ও চিনি ১৩০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এখনো চিনির সংকট কাটেনি। অধিকাংশ দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না প্যাকেটজাত চিনি। এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি দরে। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম বেড়ে হয়েছে ১৫০ টাকা ডজন। গরুর মাংসের দাম রমজানের পর থেকে দুই দফা বেড়ে এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর