‘নির্বাচনের এখনো প্রায় এক মাস বাকি। সবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দ হয়নি। কিন্তু এরই মধ্যে পরিবেশ ঘোলাটে হতে শুরু করেছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে এখনই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে জোর করে হলেও পাস করাতে হবে- এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে।’ সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে এমন অভিযোগ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসানের। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ও নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে বলে অভিযোগ করে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমরা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় কেবল পাঁচজনকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে। অথচ আওয়ামী লীগের প্রার্থী শোডাউন করে এসেছেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় অন্তত ৫০ জন নেতা-কর্মী ছিলেন। নির্বাচন কমিশন তাদের কোনোরকম বাধা দেয়নি।’
ইভিএম নিয়ে সন্দেহ ও শঙ্কা রয়েছে জানিয়ে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘সাধারণ ভোটাররা ইভিএমে অভ্যস্ত নন। মানুষ ইভিএম চায় না, তারা ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়। ইভিএমের মাধ্যমে মানুষ স্বচ্ছন্দে ভোট দিতে না পারলে ভোটার উপস্থিতি কমে যেতে পারে।’ নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে আগ্রহ আরও কমে যাবে উল্লেখ করে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘দেশে যেভাবে দখলদারি চলছে, তাতে মানুষ এমনিতেই নির্বাচন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। সিটি নির্বাচন নিয়ে সরকার কোনো ধরনের অনিয়ম করলে মানুষ ভোট নিয়ে পুরোপুরি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।’ বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন, ‘দলীয় নির্দেশনা মেনে হয়তো নেতৃবৃন্দ ভোটে যাবেন না। কিন্তু কর্মী-সমর্থকরা অবশ্যই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে যাবেন। সাধারণ মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচনী পরিবেশ ভালো থাকলে মানুষের মধ্যে ভোট নিয়ে আগ্রহ তৈরি হবে। তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে কেন্দ্রে যাবেন। তবে পরিবেশ নষ্ট করলে মানুষ ভোটবিমুখ হতে বাধ্য হবে।’
সরকারদলীয় প্রার্থী নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সরকারের লোকজন আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। সংসদ সদস্যরা প্রচারণায় অংশ নেওয়ার বিধান না থাকলেও তারা প্রতিদিনই অংশ নিচ্ছেন। সিলেটের বাইরে থেকে এসেও সংসদ সদস্যরা প্রচারণা চালাচ্ছেন। এতে আগামীতে কতটুকু লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।’
ভোটের মাঠে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া মিলছে দাবি করে মাওলানা মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘সরকারের জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানুষ অবস্থান নিয়েছে। তারা বিকল্প ভাবছে। এ ক্ষেত্রে তাদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী। আর মেয়র নির্বাচনে হাতপাখা বিজয়ী হলে সিলেট নগরীকে সর্বাগ্রে দুর্নীতি ও দুঃশাসনমুক্ত নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। প্রত্যেক নাগরিকের অংশগ্রহণে হবে এ সিটির উন্নয়ন।’