ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে চুরির অপবাদ দিয়ে এক যুবককে দুই দিন আটক রেখে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ করেছে পরিবার। ৯ আগস্ট রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের খরসূতি গ্রামে।
নিহত বাবু শেখ (২৩) উপজেলার ময়না ইউনিয়নের খরসূতি গ্রামের মিজান শেখের ছেলে। তিনি বোয়ালমারী পৌরসভার সাবেক মেয়র শুকুর শেখের ইটভাটায় চাকরি করতেন। বাবু শেখের হত্যার অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে উঠেছে তারা হলেন- খরসূতি গ্রামের মৃত পাচু শেখের ছেলে জসিম শেখ (৫০), তার ছেলে জাফর শেখ (২৫), মো. আব্বাস শেখ (২২) ও জাফর শেখের স্ত্রী শিল্পী বেগম (৪৬)।
নিহত যুবকের স্বজনরা জানান, হত্যায় অভিযুক্ত জসিম শেখের কয়েকদিন আগে অটোভ্যানের ব্যাটারি চুরি হয়। ৮ আগস্ট বাবু ছুটিতে বাড়ি এলে জসিম শেখ তাকে ডেকে নিয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে আটক রাখে। এ সময় আটকে রেখে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালানো হয়। পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে জসিম শেখের বাড়িতে গিয়ে বাবু শেখকে ছেড়ে দিতে অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দিতে কাকতি-মিনতি জানান। কিন্তু তাদের কোনো কথা কর্ণপাত করেনি জসিম। পাষ জসিম শেখ, তার দুই ছেলে ও স্ত্রীসহ বাবুর পরিবারের লোকজনের সামনেই শারীরিক নির্যাতন চালায়। পরদিন ৯ আগস্ট সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন ফের ওই বাড়িতে গেলে ঘরের বারান্দায় বাবুর মৃতদেহ দেখতে পায়।
এ সময় জসিম শেখের পরিবার দাবি করে সে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে বোয়ালমারী থানা পুলিশ বুধবার রাতে জসিম শেখের বাড়ি থেকে নিহত বাবুর মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। নিহত যুবকের মা দিনারা বেগমের দাবি তার ছেলেকে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে নিহতের বড় ভাই মো. সোহেল শেখ জানান, আমি বোয়ালমারী বাজারে ব্যবসা করি। রাতে বাড়ি ফিরে জানতে পারি আমার ভাইকে চুরির অপবাদে আটক রেখেছে। তখন জসিম শেখের বাড়িতে যাই। তাদের অনুরোধ করি আমার ভাইকে ছেড়ে দিতে কিন্তু তারা ব্যাটারি বা টাকা না দিলে তাকে ছাড়বে না সাফ জানিয়ে দেয়। পর দিন সন্ধ্যায় খবর পাই আমার ভাই আত্মহত্যা করেছে। আমার ভাইকে মেরে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়েছে জসিম শেখ ও তার ছেলেরা। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মুহাম্মদ আবদুল ওহাব জানান, খবর পেয়ে আমরা মৃতদেহ জসিম শেখের বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছি। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটা হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে। আমরা অধিকতর তদন্ত চলমান রেখেছি। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। এ বিষয়ে জসিম শেখ ও তার পরিবারের লোকজন বাড়িতে না থাকায় তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।