বুধবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৩ ০০:০০ টা

দেশে ফেরার আকুতি লিবিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা থেকে দালালের মাধ্যমে মালয়েশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেতে চেয়ে লিবিয়ায় আটকা পড়েছেন নয় বাংলাদেশি। লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় তারা দালালের কাছ থেকে মুক্ত হতে পারলেও পাসপোর্ট-ভিসা না থাকায় দেশে ফিরতে পারছেন না। এক ভিডিওবার্তায় তারা দ্রুত দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন।

আটকেপড়াদের মধ্যে সবার বাড়ি বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে। ১৭ সেপ্টেম্বর কয়েকজনের পরিবারের পক্ষ থেকে ওই নয়জনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করলে প্রথমবারের মতো বিষয়টি সামনে আসে।

আটকেপড়াদের মধ্যে আছেন গন্ডামারা ইউনিয়নের গিয়াস উদ্দিন, রুকনুল ইসলাম, মোহাম্মদ কাউছার মিয়া, আজগর হোসেন, মো. মোরশেদুল আলম, মোহাম্মদ আশেক ও তার ভাই ইব্রাহিম খলিল, বাঁশখালী পৌরসভার আইয়ুব আলী ও কাথরিয়া ইউনিয়নের মোহাম্মদ করিম। সোমবার পরিবারের কাছে করিমের পাঠানো ২ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের এক ভিডিওতে নয়জন যে কোনোভাবে দেশে ফেরার আকুতি জানান। ভিডিওতে তারা বলেন, ‘আমরা দালাল চক্রের মাধ্যমে লিবিয়ায় এসেছি। এখানে আসার পর কোনো কাজ-কর্ম নেই। এখানে আসতে ১২-১৪ লাখ টাকা করে সবার খরচ হয়েছে। এখন আমাদের কাছে দেওয়ার মতো আর কিছুই নেই। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, যত দ্রুত সম্ভব আমাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। আমরা জীবিত দেশে ফিরতে চাই। আমাদের মা-বাবারা অনেক অসহায় হয়ে গেছেন। জায়গা-জমি বিক্রি করে এখানে এসেছি।’ আটকেপড়া মোরশেদুল আলমের বাবা নুরুল আমিন বলেন, ‘নয়-দশ মাস আগে বাঁশখালীর হেলাল নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে ঢাকার ফকিরাপুলে টাকা জমা দিয়েছি। ঋণ নিয়ে ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়েছি। মালয়েশিয়া নেবে বলেছিল। কিন্তু একদিন আমার ছেলে জানায়, সে লিবিয়ায়। সেখানে ওকে অনেক মেরেছে। আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই। সে দেড় বছর আগে বিয়ে করেছে। ওর বউ চলে যেতে চাচ্ছে।’ বাঁশখালীর ইউএনও জেসমিন আক্তার জানান, ১৭ সেপ্টেম্বর তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের উদ্ধার ও দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য লিখিত আবেদন করা হয়। পরে লিবিয়ায় বাংলাদেশি দূতাবাসে কথা বলে বিষয়টির সত্যতা পাওয়ার পর নয়জনকে দালালদের কাছ থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে তারা নিরাপদে আছেন। কিন্তু কারও ভিসা-পাসপোর্ট না থাকায় কোন প্রক্রিয়ায় তাদের ফিরিয়ে আনা হবে সে বিষয়ে দূতাবাসের সঙ্গে আলোচনা চলছে। উনারা চেষ্টা করছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর