ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গণত্রাণ কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে আজ থেকে আর কোনো ত্রাণ গ্রহণ করা হবে না।
গতকাল সন্ধ্যায় টিএসসির মাঠে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক লুৎফর রহমান এ ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি জানান, ত্রাণ কার্যক্রম শুরুর পর টিএসসিতে সংকুলান না হওয়ায় আমরা কেন্দ্রীয় জিমনেশিয়াম ও ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ায় ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করি। তবে আজ থেকে ত্রাণ গ্রহণের সব কার্যক্রম সমাপ্ত।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণমাধ্যম শাখার সদস্য রেজোয়ান রিফাত জানান, এ পর্যন্ত গণত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচিতে মোট ১১ কোটি ১০ লাখ ১৩ হাজার ৫৬৯ টাকা সংগৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে খাবার, প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়সহ মোট ১ কোটি ৭৫ লাখ ১২ হাজার ৭৯৪ টাকা ব্যয় হয়েছে। সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেন, আমাদের অবশিষ্ট অর্থ বন্যার্তদের পুনর্বাসনে ব্যয় করা হবে। সরকারের দুর্যোগ মন্ত্রণালয় এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে এ বিষয়ে আমরা কাজ করব। ত্রাণ সংগ্রহ ও বণ্টনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২২ আগস্ট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, ডাকসু এবং সেন্ট্রাল ফিল্ডে গণত্রাণ কার্যক্রম চলমান থাকে। প্রাথমিকভাবে সংগৃহীত অর্থ, রসদ দিয়ে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়। পরবর্তীতে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় শুকনা খাবারের বদলে ভারী খাবারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে ২৮ আগস্ট থেকে গণরান্না কর্মসূচি শুরু করি- যার মাধ্যমে আশ্রয় কেন্দ্র এবং দুর্গম অঞ্চলে চাল-ডালের প্যাকেজ পাঠানো হয়। এ বৃহৎ কর্মযজ্ঞে প্রতিদিন প্রায় ১০০০/১২০০-এর অধিক স্বেচ্ছাসেবী দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। গত ২২ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৯১টি ট্রাক বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোতে পাঠানো হয়। এ ছাড়া বেসরকারি এবং বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারের মাধ্যমেও দুর্গম অঞ্চলগুলোতে ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- ২২ আগস্ট থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গণত্রাণ এবং গণরান্না কর্মসূচি বাবদ খরচ হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লাখ ১২ হাজার ৭৯৪ টাকা। ফান্ডে বর্তমানে রয়েছে ৯ কোটি ৩৫ লাখ ৭৭৫ টাকা। এ টাকা সমন্বয়ক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সম্মানিত শিক্ষকের দ্বারা পরিচালিত জনতা এবং সোনালি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে। এই অর্থ বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসনে ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছি। এ অর্থ কীভাবে এবং কাদের মাধ্যমে ব্যবহৃত হলে সর্বোচ্চ মানুষের উপকার হবে-সেই বিষয়ে স্থানীয় এবং বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার পরামর্শ আহ্বান করা হচ্ছে। সবার মতামতের ভিত্তিতেই এ অর্থ ব্যবহার করা হবে।