ছুটির দিনে গতকাল জমে উঠেছে আবাসন মেলা। ছাড়ের আশায় রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উপস্থিত হচ্ছেন ক্রেতারা। ভবিষ্যতের শান্তির নীড়ের আশায় ফ্ল্যাট-প্লটের দাম যাচাই করছেন অনেকে। আবাসন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের ছাড় দিয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে। বুকিং দিলেই লাখ টাকা ছাড়, এসি ফ্রি, ঢাকা টু কক্সবাজার বিমানের টিকিট মিলছে। ডাউন পেমেন্ট করলে ঢাকা টু থাইল্যান্ডের বিমান টিকিট, ওমরা করার সুযোগ, আইফোন, রয়েল এনফিল্ড বাইক, সোনার অলংকার জেতার সুযোগ। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার এসব অফারে সাড়াও মিলছে বেশ। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁও বিআইসিসিতে মেলার তৃতীয় দিনে এমন চিত্র দেখা গেছে।
শফিকুর রহমান নামের এক ক্রেতা বসুন্ধরা এলাকায় কোনো প্রজেক্ট আছে কি না জানতে চান দোয়েল ডেভেলপমেন্ট প্রপার্টিজের স্টলে। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় নির্দিষ্ট এ এলাকায় কেন ফ্ল্যাট খুঁজছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা এবং আবাসিক সুব্যবস্থার সব ধরনের সুযোগসুবিধা থাকায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট খুঁজছি। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পাশে আমার নিজের বাড়ি। এটি পুরনো। বাড়িটি পুরোটা ভাড়া দিয়ে আমি আবাসিক এলাকার ভিতর থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই মেলার স্টলগুলোতে ঘুরে ঘুরে তথ্য জোগাড় করছি। পরে সরেজমিনে গিয়ে দেখে নেব।’ দোয়েল ডেভেলপমেন্ট প্রপার্টিজের সেলস ও মার্কেটিংয়ের সিনিয়র ম্যানেজার ওমর ফারুক বলেন, আমাদের সব প্রজেক্ট বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ভিতরে। বর্তমানে আমাদের ১৫টি প্রজেক্টের কাজ চলমান রয়েছে। আরও ১৫টি প্রজেক্ট বসুন্ধরায় যুক্ত হবে। আমাদের ১৫০০ স্কয়ার ফিট থেকে ৫ হাজার স্কয়ার ফিটের প্রজেক্ট রয়েছে। মেলায় ভালো সাড়া পাচ্ছি। মেলা উপলক্ষে প্রত্যেক বেডরুমে আমরা এসি দিচ্ছি। এ ছাড়া টোটাল টাকার ওপর ছাড় রয়েছে।
মেলায় ছোট এবং মাঝারি ফ্ল্যাটের ১১টি চলমান প্রকল্প নিয়ে এসেছে এমএইচএম প্রপার্টিজ লিমিটেড। মিরপুর, কল্যাণপুর, আফতাবনগর ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বিভিন্ন সাইজ ও ধরনের ফ্ল্যাট রয়েছে তাদের। মেলা উপলক্ষে ১০ শতাংশ ছাড় ও স্পট বুকিংয়ে এসিসহ বিভিন্ন ধরনের উপহার দিচ্ছেন তারা।
সিপিডিএল-এর প্রপার্টি কনসালটেন্সি আরিফ হোসেন রিপন বলেন, মেলা উপলক্ষে প্রথম ২০টি ফ্ল্যাটে আমরা ২০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি। আমাদের ২০ বছর পূর্তি এবং মেলা উপলক্ষে এই ছাড়। ঢাকার প্রাইম লোকেশন এবং চট্টগ্রামে ৩০টি প্রজেক্ট চলমান রয়েছে। মেলায় ভালো সাড়া পাচ্ছি। মেলায় ভাটারা প্রজেক্ট নিয়ে মানুষের আগ্রহ বেশি। এ প্রজেক্টে ২০টির বেশি ফিচার রয়েছে। নতুন যুগের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের এ প্রজেক্ট সাজানো হয়েছে। প্রজেক্ট হস্তান্তরের পরও আমরা ১৫ বছর সার্ভিস দেব। এটির স্কয়ার ফিট ৯ হাজার টাকা করে বিক্রি করছি। মেলা উপলক্ষে সব প্রজেক্টে ছাড় রয়েছে।
আয়োজকরা জানায়, পাঁচ দিনব্যাপী এ মেলা চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীরা মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। মেলায় দুই ধরনের টিকিট থাকছে। একটি সিঙ্গেল অ্যান্ট্রি অন্যটি মাল্টিপল অ্যান্ট্রি। সিঙ্গেল টিকিটের প্রবেশমূল্য ৫০ টাকা। আর মাল্টিপল অ্যান্ট্রি টিকিটের প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা। মাল্টিপল অ্যান্ট্রি টিকিট দিয়ে একজন দর্শনার্থী মেলার সময় পাঁচবার প্রবেশ করতে পারবেন। অ্যান্ট্রি টিকিটের প্রাপ্ত সম্পূর্ণ অর্থ দুস্থদের সাহায্যার্থে ব্যয় করা হবে। এ বছর প্রতিদিন র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলায় মোট ২২০টি স্টল রয়েছে। এ বছর সাতটি গোল্ড স্পন্সর, ১৮টি কো-স্পন্সর, ১৮টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও ১০ অর্থলগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানকে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দিয়েছে রিহ্যাব। ২০০১ সাল থেকে ঢাকায় রিহ্যাব হাউজিং ফেয়ার শুরু হয়। এটি ঢাকায় অনুষ্ঠিত রিহ্যাবের ২৬তম ফেয়ার। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ১৫টি মেলা সম্পন্ন করেছে রিহ্যাব। রিহ্যাব ২০০৪ সাল থেকে বিদেশে হাউজিং ফেয়ার আয়োজন করে আসছে। এই ফেয়ারের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জিত হচ্ছে।