ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মৃত্যুতে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাত দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁর মৃত্যুতে দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর তিনি ৯২ বছর বয়সে বৃহস্পতিবার দিল্লির একটি হাসপাতালে মারা যান।
সরকারি ঘোষণায় গতকালের নির্ধারিত সব সরকারি কর্মসূচি বাতিল করা হয়। একইভাবে কংগ্রেস পার্টির সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনসহ সব অনুষ্ঠান আগামী সাত দিনের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, আজ সকাল ১১টায় দিল্লির শক্তি স্থলের কাছে মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁকে আনুষ্ঠানিক ২১ বার বন্দুকের স্যালুটসহ সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়া হবে। তাঁর লাশ জাতীয় পতাকায় মুড়ে দেওয়া হবে এবং তাঁর শেষযাত্রায় সামরিক ব্যান্ড ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা একটি ঐতিহ্যবাহী পদযাত্রার সঙ্গী হবেন।
তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে হাসপাতালের অফিসিয়াল বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৬ ডিসেম্বর বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তাঁকে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সে (এইমস) ভর্তি করা হয়। এতে আরও বলা হয়, বার্ধক্যজনিত শারীরিক অসুস্থতার জন্য তাঁর চিকিৎসা চলছিল এবং বাড়িতে হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা শুরু করা হয়েছিল। পরে রাত ৮টা ৬ মিনিটে তাকে দিল্লির এইমসের জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিল। সব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও রাত ৯টা ৫১ মিনিটে মারা যান তিনি। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, ক্যাবিনেট মন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা, কংগ্রেস সংসদ সদস্য রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস সংসদ সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফরনবিস, জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, কংগ্রেস নেতা শশী থারুর, সাবেক কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর রঞ্জন চৌধুরীসহ রাজনীতিবিদরা।
১৯৩২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিম পাঞ্জাবের (বর্তমান পাকিস্তান) গাহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন মনমোহন সিং। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় ভারতে চলে আসে তার পরিবার।