চোর সন্দেহে ঝিনাইদহে সুজন হোসেন (৩৫), দিনাজপুরে সাজেদুল ইসলাম (৩৮) ও টাঙ্গাইলের সখীপুরে জাহিরুল ইসলাম (৩২) নামে এক যুবক গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন। জানা গেছে, গত বুধবার রাতে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে এক নারীর ভ্যানিটি ব্যাগ চুরির অভিযোগে সুজন হোসেনকে মারধর করে একদল লোক। পরে তাকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতাল চত্বরে ফেলে যান। বৃহস্পতিবার বিকালে কয়েকজন ব্যক্তি সুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। গতকাল দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত সুজন শহরের পাওয়ারহাউজ পাড়ার বাসিন্দা। পেশায় তিনি একজন বেলুন বিক্রেতা। সদর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এদিকে গতকাল সকালে সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান এলাকায় অটোরিকশা চুরি করে পালাতে গিয়ে জাহিরুল ইসলাম গণপিটুনির শিকার হন। তিনি টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌরসভার রামদেব বাড়ির আবদুর রশিদ মিয়ার ছেলে। উত্তেজিত জনতার পিটুনিতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। একই সময়ে উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের আড়াইপাড়া থেকে শাকিল (২৪) নামে এক যুবককে বাইক চোর সন্দেহে পিটুনি দেয় জনতা।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ভুইয়া জানান, জাহিরুলের মৃত্যুর ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
দিনাজপুরে যুবককে পিটিয়ে হত্যা : দিনাজপুরের বিরামপুরে টাকা চুরির অভিযোগ তোলায় সাজেদুল ইসলাম (৩৮) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের দক্ষিণ দাউদপুর গ্রামের জোলাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
সাজেদুল ওই গ্রামের মৃত অছির উদ্দিনের ছেলে। তিনি মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী। অভিযুক্তরা হলেন একই গ্রামের রায়হান কবির (২২) ও তাঁর চাচাতো ভাই নুরুন্নবী ইসলাম (২৩)। ঘটনার পর থেকে তারা পলাতক।
জানা গেছে, বিকালে সাজেদুলের কাছে টাকা ধার চান রায়হান কবির। সাজেদুল টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। কিছুক্ষণ পর বাড়িতে রাখা সাজেদুলের গচ্ছিত ৬ হাজার টাকা হারিয়ে যায়। তিনি এ ঘটনায় রায়হান কবিরকে জিজ্ঞেস করলে প্রথমে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার পর রায়হান তাঁর চাচাতো ভাই নুরুন্নবীকে ডেকে আনেন। দুজনে মিলে বাঁশের লাঠি দিয়ে সাজেদুলকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। বাধা দিতে গেলে সাজেদুলের মাকেও মারধর করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সাজেদুলকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, টাকা চুরির ঘটনা কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড। অভিযুক্ত দুজন পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।