দেবীশক্তির বন্দনা ও অসুরবধে অশুভ খণ্ডনের প্রত্যয়ে আজ শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাষ্টমী। গতকাল নবপত্রিকাপ্রবেশ, সপ্তমী পূজা এবং সন্ধ্যারতির মধ্য দিয়ে মহাসপ্তমী পালিত হয়েছে। দুর্গা দেবীর নবপত্রিকাপ্রবেশ ও স্থাপন এবং পূজার মধ্য দিয়ে সপ্তমী শেষ হয়। এরপর কয়েক দফায় অঞ্জলি দেন উপবাসরত ভক্তরা।
পঞ্জিকামতে এ আচারের মধ্য দিয়ে সনাতনধর্মাবলম্বীরা কৃষি, খনিজ, বনজ, জলজ, প্রাণিজ ও ভূমিসম্পদ রক্ষার জন্য দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন। সপ্তমীলগ্নে নবপত্রিকাপ্রবেশ একটি ‘প্রতীকী’ পূজা। ‘নবপত্রিকা’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ নয়টি গাছের পাতা। এ পূজায় কদলী বা রম্ভা (কলা), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব (বেল), দাড়িম্ব (দাড়িম), অশোক, মান ও ধান এ নয়টি উদ্ভিদকে পাতাসহ একটি কলা গাছের সঙ্গে একত্র করা হয়। পরে এক জোড়া বেলসহ শ্বেত অপরাজিতা লতা দিয়ে বেঁধে লালপাড়ে সাদা শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর আকার দেওয়া হয়। তার কপালে সিঁদুর দিয়ে দেবী প্রতিমার ডান দিকে দাঁড় করিয়ে পূজা করা হয়। প্রচলিত ভাষায় নবপত্রিকার নাম ‘কলাবউ’। নবপত্রিকাপ্রবেশের পর দর্পণে দেবীকে মহাস্নান করানো হয়। দুর্গা প্রতিমার সামনে একটি দর্পণ বা আয়না রেখে সেই দর্পণে প্রতিফলিত প্রতিমার প্রতিবিম্বে বিভিন্ন উপচারে দেবীকে স্নান করানো হয়।
ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গতকাল অঞ্জলি দিতে আসা রিদিতা ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘সপ্তমী পূজার মধ্য দিয়ে মূলত পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। উপবাস থেকে অঞ্জলি দিয়ে দেবীর পায়ে সমর্পণ করা হয় মনের সব পাপ, তাপ, শোক।’ বসুন্ধরা সর্বজনীন পূজাম পে সন্ধ্যার পর শুরু হয় আরতির ধুম। ধুপতি হাতে ধুনচি নাচে মেতে ওঠেন সবাই। আগমনি গান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জমজমাট হয়ে ওঠে পূজাম প। আজ মহাষ্টমী। কুমারীপূজা, সন্ধিপূজা এবং অষ্টমী পূজার মধ্য দিয়ে পালিত হবে মহাষ্টমী। এদিকে রামকৃষ্ণ মিশন দুর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিন কুমারীপূজা করে থাকে, যেখানে কুমারী বালিকাদের দেবীজ্ঞানে পূজা করা হয়। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায় রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হয়। মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হবে।’ উৎসব উপলক্ষে মন্দিরে মন্দিরে আরতি ও সংগীত প্রতিযোগিতা, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বিশেষ প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।