জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দৃশ্যপট বদলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র রাজনীতির। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের একাধিপত্যে গড়ে ওঠা দীর্ঘদিনের গেস্টরুম ও র্যাগিং সংস্কৃৃতি কমলেও থেমে নেই সাইবার বুলিং। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে প্রায়ই নারী শিক্ষার্থীরা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেন। অনেকসময় প্ল্যাটফর্মগুলোর কমেন্ট সেকশনেও নিজ ক্যাম্পাসের অন্য শিক্ষার্থীর হাতে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন তারা। বিশেষ করে ডাকসু নির্বাচন চলাকালীন সময়ে এ ধরনের ঘটনার পরিমাণ বেড়ে যায়।
কবি সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থী মাঈশা মালিহা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলগুলো কার্যকর করতে হবে। কোনো অভিযোগ দেওয়া হলে তা দ্রুত তদন্তের আওতায় এনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। ডাকসু নির্বাচনের সময় আমার প্রতিপক্ষ নানাভাবে আমাকে ট্যাগ করে ও আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্ট জনসম্মুখে ছড়িয়ে এবং তিলকে তাল করে প্রচার করে আমার বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণা করে। হল রিটার্নিং অফিসার বরাবর ও দায়িত্বশীল সাইবার মিডিয়া সেল বরাবর অভিযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু তাদের দীর্ঘসূত্রতার কারণে এর কোনো ফলাফল পাইনি। ডাকসুর কাছে দাবি থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল ও সাইবার সিকিউরিটি সেল কার্যকর করা।
সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী নুসরাত রুষা বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীর সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন নতুন নয়। যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল থাকলেও তা অনেকাংশে অকার্যকর। নির্বাচনের আগেই একজন নারী প্রার্থী প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকি পেয়েছিলেন। অথচ সেই ঘটনাটি পর্যন্ত এখনো যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের টেবিলে পৌঁছায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ফেডারেশনের আহ্বায়ক আরমানুল হক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা সামাজিক এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বেশ হেনস্তার শিকার হয়ে আসছেন। নারীদের ৫টা হলের মধ্যে ৩টা হলই ক্যাম্পাসের বাইরে, ফলে তারা প্রতিনিয়ত নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়ছেন। আবার কোনো আবাসিক শিক্ষার্থী জরুরি প্রয়োজনে রাত ১০টার পর হলে প্রবেশ এবং বাহির হতে গেলে হল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক হেনস্তার শিকার হন। ডাকসুর সমাজসেবা পদপ্রার্থী সীমা আক্তারকে ডাকসু নির্বাচনের পূর্বে ভয়াবহ সাইবার বুলিং করা হয়, তখন আমরা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দায়ের করি, কিন্তু মাস পার হলেও কোনো তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি।