শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে নানা বর্ণিল আয়োজনে পালিত হলো গারো সম্প্রদায়ের ওয়ানগালা সামাজিক উৎসব। এ উপলক্ষে তারা বিশেষ প্রার্থনা, শস্য দেবতার অর্চনাসহ তিন দিন ধরে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উপজেলার মরিয়মনগর উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজন করা হয় মেলার। এতে ঐতিহ্যবাহী পোশাকসহ ও নিজেদের ঐতিহ্যবাহী নানা পদের পিঠাসহ নানান খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। মেলায় তিন দিন ধরে চলে গারো শিল্পীদের নিজস্ব ভাষায় গীত ও নৃত্য পরিবেশন।
গতকাল বর্ণিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হয় তিন দিনব্যাপী এ উৎসব। ঝিনাইগাতীর মরিয়মনগর ক্রিশ্চিয়ান মিশন এ উৎসবের আয়োজন করে। এর আগে শুক্রবার সকালে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ঢাকা মহা ধর্মপ্রদেশের কার্ডিনাল বিশপ প্যাট্রিক ডি. রোজারিও। এ সময় গারো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে গারো পুরোহিত (খামাল) মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে তাদের শস্য দেবতা মিসি সালজংয়ের উদ্দেশে উৎপাদিত শস্যগুলো উৎসর্গ করেন। পরে গারো সম্প্রদায়সহ দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা পরিচালনা করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। কার্যত শস্য দেবতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে গারো সম্প্রদায় এ ওয়ানগালা উৎসব পালন করে থাকে। ওয়ানগালায় গিয়ে দেখা যায়, গারোরা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে উৎসবে যোগ দিয়েছেন। গারো নারী-পুরুষের অনেকের মাথায় ‘খুতুপে’ নামের নানা কারুকাজ করা পাগড়ি পরেছেন। কেউ কেউ ওই খুতুপে গুঁজেছেন মোরগের পালক দিয়ে তৈরি বিশেষ অলংকার। পরেছেন গারোদের ঐতিহ্যবাহী দকমান্দা, দকসারির মতো নানান রঙের পোশাক। মেয়েরা কোমরে জড়িয়েছেন রিকমাচু বা বিছা। এ ছাড়া ওয়ানগালাকে কেন্দ্র করে গারোদের বাড়ি বাড়ি পিঠা, পায়েসসহ নানা রকমের পছন্দের খাবার রান্না ও বিতরণসহ মেতেছেন আনন্দন্ডউৎসবে। দল বেঁধে যোগ দিচ্ছেন বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত মেলায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। ওয়ানগালা উৎসব কমিটির আহ্বায়ক মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর পালপুরোহিত ফাদার লরেন্স রিবেরু সিএসসি জানান, ১৯৮৫ সাল থেকে মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীর উদ্যোগে ওয়ানগালা উৎসব পালন করা হচ্ছে।