'ডাভ' এমন একটি পৃথিবী তৈরিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে সৌন্দর্য আত্মবিশ্বাসের উৎস; দুশ্চন্তিার নয়। এই মতাদর্শের ভিত্তিতে ব্র্যান্ডটি সবসময় নারীদের ওপর বিভিন্ন ধরনের বাহ্যিক সৌন্দর্যের চাপের প্রভাব শনাক্ত করেছে এবং এই বিষয়গুলোর ব্যাপারে সামাজিক সচতেনতা গড়ে তুলতে অসংখ্য ক্যাম্পেইন করেছে।
২০১৩ সালে ডাভ-এর একটি গবেষণা থেকে জানা যায় যে, ১০ জনের মধ্যে মাত্র ১ জন নারী তাদের বয়স প্রকাশ করতে গর্ববোধ করেন এবং বেশিরভাগ নারীই মনে করেন শুধুমাত্র তারুণ্যই সৌন্দর্যের অপর নাম। আর তাই নারীকে অনুপ্রাণিত করতে, নারী যেন জীবনের প্রতিটি ধাপে তার বয়স উদযাপন করে সেই লক্ষ্যে ডাভ নির্মাণ করেছে ‘হাউ ওল্ড আর ইউ’ নামে একটি শর্টফিল্ম। এতে দেখা যায়, ছোট মেয়েরা গর্বের সাথে তাদের বয়স নিয়ে কথা বলছে কিন্তু নারীরা এই প্রশ্নটি এড়িয়ে যাচ্ছেন।
বয়স নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে নারীরা সবসময় বয়সের নেতিবাচক দিকগুলোতেই বেশি নজর দেন। ফলে সৌর্ন্দয নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তা আরও বেড়ে যায়। নারীর এই দুশ্চিন্তাকে আরও ভালোভাবে বুঝতে গত ১৮ অক্টোবর 'ডাভ' এবং 'দ্য ডেইলি স্টার’ বিভিন্ন পেশার সফল নারীদের নিয়ে এক গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে।
গোলটেবিল আলোচনায় নাট্য ব্যক্তিত্ব বিপাশা হায়াৎ বলেন, বয়স কখনো একজন মানুষকে সংজ্ঞায়তি করতে পারে না; বরং কাজই প্রতিটি মানুষের পরিচয় বহন করে।
চৌধুরী তাসনিম হাসিন (পুষ্টিবিদ, ইউনাইটেড হাসপাতাল) তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, এই দুশ্চিন্তা শুধুমাত্র একজন মানুষের নিজের বা সমাজ দ্বারা সৃষ্ট নয়; বরং সে কীভাবে বেড়ে উঠছে তার দ্বারাও প্রভাবিত।
ফাহিমা চৌধুরী (ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ওগিলভি অ্যান্ড ম্যাথার) বিশ্বাস করেন, সৌর্ন্দয নিয়ে এই অবাস্তব ধারণাগুলো পরিবর্তন করার দায়িত্ব মূলত আমাদের সবার। তার সাথে একমত পোষণ করে সারা যাকের বলেন, পুরুষদেরও একইভাবে এই আলোচনায় অংশ নিতে হবে যাতে সমস্যাটি একদম মূল থেকে সমাধান করা যায়। এই বিষয়টি গ্রামের প্রেক্ষাপটে আরও বেশি প্রাসঙ্গিক, যেখানে একটি নির্দিষ্ট বয়সের পরে মেয়েদের বিয়ে দেয়ার জন্য অভিভাবককে মোটা অংকের যৌতুক দিতে হয়। মেয়েরা সৌন্দর্য, আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদার ক্ষেত্রে তাদের মায়েদের আচরণকেই অনুসরণ করে। সুতরাং, বয়সের প্রতিটি ধাপে মায়েদের উচিত নিজেদের সৌন্দর্যকে অনুধাবন করা, যা তাদের মেয়েদের জন্য ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
সবশেষে সবাই এই বিষয়ে একমত হন যে, মা ও তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে সৌন্দর্যের সাথে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে, যা তাদের আত্মমর্যাদা বাড়াতে সাহায্য করবে এবং এর মাধ্যমে মেয়েরা তাদের অর্ন্তনহিতি শক্তিকে পুরোপুরিভাবে অনুধাবন করতে পারবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৩ নভেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ/ ০২