বাঙালির নাস্তায় পাউরুটি কোনো দিনই বিশেষ উচ্চাসনে বসতে পারেনি। লুচি, পরোটার কাছে বরাবরই কয়েক গোল খেয়ে পিছিয়ে থাকতে হয়েছে তাকে। কাজের চাপ, ব্যস্ততায় ক্রমশই লুচি, পরোটাকে পিছন ফেলে দিয়েছে পাউরুটি। আর স্বাস্থ্য সচেতনতার দৌড়ে তো এখন ভিলেন হোয়াইট ব্রেড।
লুচি, পরোটার প্রেমে মজে থাকা বাঙালির এই প্রজন্মের সবচেয়ে কাছের বন্ধু ব্রাউন ব্রেড। সত্যিই কি হোয়াইট ব্রেডের তুলনায় ব্রাউন ব্রেড বেশি স্বাস্থ্যকর? বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এর পুরোটাই নির্ভর করছে আমাদের উপর।
হোল হুইট ব্রেড (ব্রাউন ব্রেড) না প্রসেসড হোয়াইট ব্রেড কোনটা আপনার জন্য বেশি স্বাস্থ্যকর তা নির্ভর করে আমাদের শরীরে থাকা মাইক্রোবায়োম বা গাট ব্যাক্টেরিয়ার উপর। এর আগে অনেক গবেষণাপত্রেই ব্রাউন ব্রেডকে হোয়াইট ব্রেডের তুলনায় বেশি স্বাস্থ্যকর বলা হলেও ইজরায়েলের ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের গবেষকরা কিন্তু অন্য কথা বলছেন। তারা গবেষণার জন্য ২০ জন সুস্থ অংশগ্রহণকারীকে বেছে নেন। দেখা যায়, শরীর বিশেষে দুই ধরনের ব্রেডের প্রভাব বদলে যায়।
এরপর অংশগ্রহণকারীদের দুটো দলে ভাগ করা হয়। একদলকে এক সপ্তাহ ধরে বেশি পরিমাণ প্রসেসড, প্যাকেজড হোয়াইট ব্রেড খেতে দেওয়া হয়। মোট ক্যালোরির ২৫ শতাংশ। অন্য দলকে বেশি পরিমাণ ব্রাউন ব্রেড রাখতে বলা হয় ডায়েটে। এরপর দুই সপ্তাহ ব্রেড খাওয়া বন্ধ রাখতে হয় দুই দলকেই। পরের এক সপ্তাহে সম্পূর্ণ উল্টে দেওয়া হয় ডায়েট। অর্থাৎ আগের বার যে দল বেশি পরিমাণ হোয়াইট ব্রেড খেয়েছিল তাদের এ বার ব্রাউন ব্রেড খেতে দেওয়া হয়, অন্য দলকে হোয়াইট ব্রেড।
গবেষণা চলাকালে অংশগ্রহণকারীদের গ্লুকোজের মাত্রা, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ফ্যাট, কোলেস্টেরলের মাত্রা, কিডনি ও লিভারের উৎসেচকের মাত্রা পরীক্ষা করা হয়।
দেখা যায়, কারও শরীরে হোয়াইট ব্রেড বেশি তাড়াতাড়ি পরিপাক হয়, কারও শরীরে ব্রাউন ব্রেড পরিপাক হয় সহজে। তাই যদি আপনার প্রিয় হয় হোয়াইট ব্রেড এবং তা খেয়ে কোনো সমস্যা না হয়, আপনি স্বাস্থ্যের চিন্তা না করেই তা খেতে পারেন।
বিডি প্রতিদিন/০৯ জুন ২০১৭/আরাফাত