১৬ নভেম্বর, ২০২২ ১১:০২

হালকা শীত পোশাক


হালকা শীত পোশাক

মডেল : শ্রেয়া, ছবি : মনজু আলম

প্রকৃতিতে কমছে সূর্যের তেজ। যদিও বাতাসটা খুব বেশি শীতল নয়। তারপরও শীতের আগমন বলে কথা। একটু উষ্ণতা পেলে মন্দ হতো না। তবে শীতে জবুথবু হয়ে থাকার মতো পোশাকের প্রয়োজনও এখনো পড়েনি।  পাতলা কাপড়ের তৈরি, স্টাইলেও আসবে ভিন্নতা, রইল পরামর্শ...

শীতকালে সব ধরনের পোশাক পরা যায়। তাই বলা যায়, শীত হলো বৈচিত্র্যময় পোশাকের ঋতু। যে জামা পরে গ্রীষ্মে অস্বস্তি লাগে শীতে তা অনায়াসে চাদর কিংবা জ্যাকেটের নিচে পরা যায়। হেমন্তে হালকা শীত পড়তে শুরু করে। তাই এ সময় নরম উল, খাদি কিংবা ডেনিমের তৈরি হালকা পোশাক বেছে নেওয়া যেতে পারে। এ সময় ফুল হাতা ও লম্বা কাটের শ্রাগ, টপস, গেঞ্জি কাপড়ের তৈরি পোশাক অনায়াসে পরা যায়।

ফ্যাশন বোদ্ধাদের মতে, শীত কম বলে এখনো ভারী শীত পোশাকে ঝোঁক নেই ক্রেতাদের। হালকা শীতে পরা যায় এমন পোশাকই বেশি কিনছেন ক্রেতারা। শীত উপলক্ষে নতুন পোশাক নিয়ে এসেছে ফ্যাশন হাউস জেন্টল পার্ক। এ বছর শীত পোশাকে দেওয়া হয়েছে উজ্জ্বল রঙের প্রাধান্য। এ ছাড়া যেহেতু শীত এখনো জেঁকে বসেনি। তাই এখন হালকা শীত পোশাকের চাহিদা বেশি। ধীরে ধীরে ভারী শীতের কাপড় আসবে। তবে এখনই যারা ভারী শীতের কাপড় কিনতে চান তারা যাতে নিরাশ না হন সে জন্য কিছু ভারী কাপড়ও রাখা হচ্ছে।
এই সময়ে সবাই ঝুঁকেন সুতি, খাদি কিংবা ডেনিমের তৈরি হালকা পোশাকে। আজকালের তরুণ সমাজও বেশ সচেতন, তাদের ফ্যাশনে এসব পোশাকই চলছে পুরোদমে। তা ছাড়া হালকা শীতের পোশাকগুলো বেশ স্টাইলিশও বটে। তবে ট্রেন্ডও বদলে যাচ্ছে বছর বছর। বেশি শীতে সোয়েটারের বিকল্প আর কী হতে পারে। কিন্তু হালকা শীতে! চিন্তার কিছু নেই। তরুণ-তরুণীদের জন্য রেডি টু ওয়্যার আউটফিট হিসেবে এবার হালকা শীতে থাকছে জ্যাকেট, কটি, সোয়েটার, ডেনিম, ক্রেপ, শ্রাগ, ওয়েস্টকোট, ডেনিম শার্ট, জ্যাকেট, পাতলা শালসহ হরেক রকম পোশাক। লেয়ারিং ফ্যাশন ট্রেন্ডের আদলে শীত পোশাকে প্রাধান্য পেয়েছে রঙের বর্ণিলতা। হালকা শহুরে শীতে পরার উপযোগী নিট কাপড়ের ইনার পলো, শ্রাগ ও টি-শার্টও ফ্যাশনে ইন। চাইলে পুরো হাতার, লম্বা কাটের শ্রাগও পরতে পারেন। তবে পাতলা কাপড়ের তৈরি হলে পরে আরাম পাবেন। গেঞ্জি কাপড় অথবা দুই-তিন ধরনের কাপড়ের মিশ্রণে তৈরি করা হচ্ছে হালকা শীতের পোশাকগুলো। ছবির শ্রাগটি সিঙ্গেল জার্সি নিট দিয়ে তৈরি করা। কামিজ কিংবা পাশ্চাত্য পোশাকের ওপরে পরা যাবে অনায়াসে। পলিয়েস্টার উলের তৈরি হাফহাতা টি-শার্ট। যারা পুরো হাতা পরতে চান না, তাদের জন্য আদর্শ। উলের পরশ থাকায় কিছুটা ওমও পাবেন। পাতলা সুতি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে টি-শার্ট দুটি। হালকা শীতের জন্য আদর্শ। দাওয়াতে সিল্কের তৈরি এ ধরনের স্টাইল শাল পরতে পারেন। জমকালো ভাব নিয়ে আসবে দাওয়াতের লুকে। জিন্স, টাইটস কিংবা সোজা কাটের প্যান্ট বা পালাজ্জোর সঙ্গে ভালো লাগবে।

এ সময় ভারী পোশাকের পরিবর্তে পরতে পারেন ভারী কাপড়ের টপস, বিভিন্ন ডিজাইনের লং কার্ডিগান বা পাতলা সোয়েটারও। এ সময়ে লেয়ারিংয়ের হালকা ধাঁচের এসব পোশাকের মজা হলো, এতে ভিতরের পোশাকটিও তেমন ঢাকা পড়ছে না। অর্থাৎ সামনের অংশে খোলা কোনো সোয়েটার পরলে ভিতরে পছন্দের ইনার টি-শার্টটিও পরতে পারেন। প্রিয় টি-শার্ট বা টপগুলো গরমের জন্য তুলে রাখার তেমন প্রয়োজন নেই। জ্যাকেট আর শ্রাগের বেলায়ও তাই। সামনের অংশে বোতাম দেওয়া শীতের পোশাক এখন কমই দেখা যাচ্ছে। সোয়েটারের গলাও এখন বেশ বৈচিত্র্যতায় পূর্ণ। তরুণীদের জন্য অ্যাসিমেট্রিক বা অসমান কাটের সোয়েটারও এই শীতে বেশ দেখা যাবে। এক্ষেত্রে জিন্স বা লেগিংসের সঙ্গে লং সোয়েটার ভালোই মানাবে। এ ছাড়াও পরতে পারেন গেঞ্জি কাপড় বা ট্রাউজার কাপড়ের তৈরি হুডিও। এটি একদিকে যেমন হালকা শীতের জন্য আরামদায়ক, আবার হালকা শীতে পরার জন্য ব্লেজার বেশ জনপ্রিয়। যে কোনো পরিবেশে মানানসই। শাড়ি বা সালোয়ার যে কোনো পোশাকের ওপর অনায়াসেই পরা যায় ব্লেজার। একদিকে স্টাইলিশ, অন্যদিকে হালকা শীতে পরার জন্য বাজারেই পাওয়া যায় তিন বা চারটি উজ্জ্বল ও গাঢ় রঙের শেডের নকশার করা পোশাক। ডিজাইনাররা জানালেন, প্রকৃতির ধূসরতা কাটাতেই যেন পোশাকের রংঢঙে এত কারসাজি। এদিকে বছরের অন্য সময়ে যে গাঢ় রং একেবারেই পরা হয় না, সে রঙের পোশাকই শীতে দেবে উষ্ণতা- বললেন কে ক্রাফটের উদ্যোক্তা ও পরিচালক খালিদ মাহমুদ খান। শীতের কাপড়ে সব থেকে বেশি ব্যবহার করা হয় কালো, গাঢ় নীলের মতো জমকালো রং। তবে রাতের বিয়ে বা যে কোনো উৎসবে কালোর সঙ্গে উজ্জ্বল রং যেমন লাল, মেরুন, গোলাপি, ম্যাজেন্টা, নেভি ব্লু, গাঢ় সবুজ ইত্যাদি রঙের প্রিন্ট বা ভারী কাজ করা পোশাকও এনে দেবে দাওয়াতের অনুভব। এ ছাড়া এ সময়ে পোশাকে বিপরীত রঙের প্রাধান্যও বেশ দেখা যায়। কালো বা চকলেট রঙের জ্যাকেট, শ্রাগ বা শালের সঙ্গে গাঢ় সবুজ, নীল বা মেরুন রঙের পোশাক ভিন্নতা নিয়ে আসবে। এ ছাড়াও শীত মৌসুমে জিন্স কিংবা গ্যাবার্ডিন পরে আরাম পান অনেকেই। জিন্সের তৈরি টি-শার্ট স্টাইল ও আরাম দুটোই দেবে। গেঞ্জি কাপড়ের তৈরি পুরো হাতার সাদা রঙের টি-শার্টও বেশ নজরকাড়া।

দেশি পোশাক ব্র্যান্ড নিত্য উপহার, বিশ্বরঙ, কে ক্রাফট, লা-রিভ, জেড অ্যান্ড জেড কালেকশনসহ অন্যান্য হাউসেও এসব পোশাক মিলবে। তাছাড়া বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, গুলশান পিংক সিটি, নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, বঙ্গবাজার, মিরপুরের মার্কেটগুলোতে মিলবে হালকা শীত পোশাক।

লেখা : ফেরদৌস আরা

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর