শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, তরুণ সমাজকে জনসম্পদে পরিণত করার জন্য শিক্ষায় বিনিয়োগের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, আমাদের যে তরুণ জনগোষ্ঠী, তাদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য তৈরি করতে হবে। এজন্য শিক্ষায় বিনিয়োগের বিকল্প নেই। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হারিয়ে যাবে বলে অনেকেই বলছেন। তবে সেই সঙ্গে অনেক সম্ভাবনাও তৈরি হবে। সেই সম্ভাবনার জন্য আমাদের শিক্ষার্থীদের তৈরি করতে হবে।
আজ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বিইউপির উপাচার্য মেজর জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান। বিইউপি সিনেট সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খানসহ বিইউপির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ডা. দীপু মনি বলেন, শিক্ষায় বিনিয়োগ নিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দিকনির্দেশনা। তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষায় জিডিপির অন্তত চার শতাংশ বিনিয়োগের কথা বলেছিলেন। কিন্তু আমরা আজও তিন শতাংশের বেশি বিনিয়োগ করতে পারছি না। তবে অন্যান্য যেসব বিষয়ে বিনিয়োগ করা হচ্ছে, সেগুলো পক্ষান্তরে শিক্ষা খাতেই বিনিয়োগ হচ্ছে। কারণ সেগুলো শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করছে। দারিদ্র্য যেন কারও উচ্চ শিক্ষা অর্জনে বাধা হয়ে না দাঁড়ায় আমাদের সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষা ও গবেষণার মান আরও বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, কার কতো বেশি শিক্ষার্থী আছে সেটি দেখলে হবে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের গুণগত মান নিয়ে ভাবতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেখতে হবে যে, তারা শিক্ষার্থীদের নতুন কী জ্ঞান দিতে পেরেছেন যা দিয়ে দেশ ও বিশ্ব উপকৃত হবে। এর আগে প্রধান অতিথি হিসেবে বিইউপির কমপ্রেহেনসিভ লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, রিমোট প্রক্টরিং এবং প্ল্যাজারিজম চেকার সফটওয়্যারের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিইউপির প্রশংসা করে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, অনেকগুলো কারণেই আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো র্যাংকিংয়ে স্থান পায় না। প্ল্যাজারিজম (চৌর্যবৃত্তি)- এর কারণে আমাদের দেশের উচ্চ শিক্ষার যে চর্চা করা উচিত সেটি করা যায়নি। শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষা নিতে এসে পড়াশোনা ছাড়া আর সবকিছুই করছে না। এর পেছনে নানান কারণ আছে। তবে উন্নত বিশ্বের যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে পরিচালিত হয় তার সব উপাদান বিউপিতে আছে। উচ্চ শিক্ষায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। বিউপিতে শৃঙ্খলায় কোনো ছাড় নেই। সেকারণেই বিইউপি এগিয়ে যাচ্ছে।
এহসান ও রেজাউরের অনন্য উদ্ভাবন:
করোনাকালীন সংকটময় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের শিশুদের জ্ঞানের স্বল্পতার কথা চিন্তা করে রেজাউর রহমান উদ্ভাবন করেছেন ‘কম্প্রিহেনসিভ লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এলএমএস)। যুক্তরাজ্য থেকে এমবিএ করা বিএমএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজাউর রহমান ‘মিটিসল সাইবার সিকিউরিটি, সাইবার সিকিউরিটি একাডেমি এবং বাংলাদেশ ইন্টারনেট সেফটি ফাউন্ডেশন ফর চিলড্রেন (বিআইএসসি)’ এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। বিআইএসসি’র অপর প্রতিষ্ঠাতা এহসান হক ইন্টারনেটে চৌর্যবৃত্তি প্রতিহত করতে উদ্ভাবন করেছেন ‘রিমোট প্রক্টরিং এন্ড প্লাগারিজম চেকার’ সফটওয়ার। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও সুইজারল্যান্ডে কাজ করেছেন এহসান হক। ছিলেন ব্যাংকার। কাছ থেকে দেখেছেন হ্যাকিং ও ডিজিটাল চুরির অনেক ঘটনা। নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে দেশের সাইবার জগতকে নিরাপদ করতে কাজ করে যাচ্ছেন এ প্রযুক্তিবিদ।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল